আওয়ার ইসলাম: সাধারণ সাদা চিনিকেই বলা হয় ‘সাদা বিষ’, সেখানে দেশে আসছে ডাবল ভেজাল চিনি। সাধারণ চিনির বদলে নিষিদ্ধ ঘন চিনিতে ছেয়ে গেছে রাজধানীর পাইকারী বাজার। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার টন নিষিদ্ধ ঘন চিনি ঢুকছে। এরপর ব্যবহৃত হচ্ছে মিষ্টি, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকোলেট, কন্ডেন্সড মিল্ক প্রভৃতি মিষ্টি জাতীয় খাদ্যদ্রব্যে।
সাধারণ চিনির চেয়ে কমপক্ষে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি এই ঘন চিনির বৈজ্ঞানিক নাম সোডিয়াম সাইক্লামেট। তবে বন্দর দিয়ে আমদানির সময়ে পুলিশি ঝামেলা থাকায় সাইট্রিক এসিড অথবা সোডিয়াম সাইট্রেট নামে আমদানি হচ্ছে এই বিষ। সোডিয়াম সাইক্লামেট, সাইট্রিক এসিড ও সোডিয়াম সাইট্রেট তিনটি দেখতে একই রকম হওয়ায় খুব সহজেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখকে ফাঁকি দেয়া যাচ্ছে।
কোনো একটি খাদ্যদ্রব্যে সাধারণ চিনি পঞ্চাশ কেজির প্রয়োজন হলে তার বদলে নিষিদ্ধ এই সোডিয়াম সাইক্লামেট অর্থাৎ ঘন চিনি এক কেজি দিলেই কাজ উদ্ধার হয়ে যায়। এর ফলে বাড়তি মুনাফা হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার টাকা।
পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে দুই রকম ঘন চিনি বিক্রি হচ্ছে। দুইটার দামেও রয়েছে বিশাল ফারাক। এক প্রকার ঘন চিনি ২২০ টাকা এবং অন্যটি ১৪০ টাকা। দামে এতো পার্থক্য হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে জানা গেছে, এর মধ্যে একটি খাঁটি ঘন চিনি, অন্যটি ভেজাল ঘন চিনি। অর্থাৎ ঘন চিনিই যেখানে মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, সেখানে ক্ষতিকর ঘন চিনির সাথে আবার মেশানো হচ্ছে ভেজাল!
ভেজাল ১০০ গ্রাম ঘন চিনি পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছিলো ফার্মগেটের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের ল্যাবরেটরিতে। পরীক্ষার রিপোর্টে পাওয়া যায়, ভেজাল ঘন চিনির সাথে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার মেশানো হয়েছে। এই সার দেখতে একেবারে চিনির মতো হলেও মাত্র ১৫/২০ টাকা দরে বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এবং স্বাদহীন হওয়ায় ঘন চিনির সাথে মেশালে কোনোভাবেই বোঝার উপায় থাকছে না। দাম কম হওয়ায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা এই ভেজাল ঘন চিনিই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোডিয়াম সাইক্লামেট বা ঘন চিনি খেলে মানব শরীরে নানা জটিল রোগের সৃষ্টি হতে পারে। যেমন, ক্যান্সার, কিডনি বিকল, হজম শক্তি হ্রাস ইত্যাদি। এর সাথে আবার ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার মানব শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতির মাত্রা হাজার গুণে বাড়বে।
-ওএএফ