আওয়ার ইসলাম: দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা চুরির ঘটনায় সাবেক এমডি প্রকৌশলী হাবিবউদ্দীন আহমেদসহ ৩ কর্মকর্তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই আদেশে সাবেক ৬ এমডিসহ ২০ জনকে জামিন দেন বিচারক।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদ ভূঞা এ আদেশ প্রদান করেন।
যাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন- কয়লা লোপাটের ঘটনা ধরা পড়ার সময়কালীন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিবউদ্দীন আহমেদ, খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আবু তাহের মুহা. নুর-উজ-জামান ও স্টোর ডিপার্টমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক একেএম খালেদুল ইসলাম।
দুদকের আইনজীবী ওমর ফারুক আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, কয়লা লোপাটের ঘটনায় সুস্পষ্ট অভিযোগ আসায় ৩ জনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। চার্জশিটে ২০ জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পর্যায়ক্রমে না আসায় আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার একই আদালত দুদকের দাখিল করা চার্জশিট আমলে নেন। একই সঙ্গে চার্জশিটভুক্ত ২৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান জাহানী, অ্যাডভোকেট তহিদুল হক ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী প্রমুখ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিকটন কয়লা চুরি হয় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে। যার আনুমানিক মূল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকা ৮৪ পয়সা। এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কম্পানির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. আনিসুর রহমান বাদী হয়ে গত বছর ২৪ জুলাই ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে পার্বতীপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় দুদক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।
মামলায় আসামি করা হয় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি প্রকল্পের সাবেক সাতজন এমডিসহ ২৩ জন আসামী। এরা হলেন সাবেক এমডি মুহা. মাহবুবুর রহমান, মুহা. আব্দুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশিদ আলম, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মুহা. আনিসুজ্জামান, প্রকৌশলী এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহমেদ।
এ ছাড়া সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) শরিফুল আলম, মুহা. আবুল কাশেম প্রধানিয়া, আবু তাহের মুহা. নুরুজ্জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদা, মুহা. আরিফুর রহমান ও সৈয়দ ইমাম হাসান, উপব্যবস্থাপক মুহা. খলিলুর রহমান, মুহা. মোর্শেদুজ্জামান, মুহা. হাবিবুর রহমান, মুহা. জাহিদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক সত্যেন্দ্র নাথ বর্মন, মুহা. মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক মুহা. সোহেবুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক এ কে এম খাদেমুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক অশোক কুমার হাওলাদার ও উপমহাব্যবস্থাপক মুহা. জোবায়ের আলী আসামী রয়েছেন।
মামলার এজাহারে ১৪ জন আসামি ছিল। তদন্তে ৯ জনের নাম যুক্ত হওয়ায় এজাহারনামীয় পাঁচজনকে আসামি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটে যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন ব্যবস্থাপক মুহা. মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক একরামুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপক মহা. আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী ও মহাব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র সাহা।
-এএ