আওয়ার ইসলাম: টালমাটাল অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের অর্থনীতি। সোমবার নোবেল জয়ের পর দেশের অর্থনীতি নিয়ে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মতে, বর্তমানে যে তথ্য ও পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ভারতের অর্থনৈতিক দুর্দশা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
এদিন আমেরিকায় এক ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। অভিজিৎ আরো জানিয়েছেন, ‘গত পাঁচ-ছ বছরে আমরা অন্তত কিছু আর্থিক বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করছিলাম। কিন্তু, এখন সেই আশ্বাসটুকুও নেই।’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতো তার প্রিয় ছাত্র অভিজিৎও বর্তমান মোদি সরকারের সমালোচক হিসেবেই পরিচিত। এদিন তার প্রতিক্রিয়াতেও সেই বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। শুরু থেকেই নোটবাতিলের বিরোধিতা করেছেন তিনি।
সেই সময় এক সাক্ষাৎকারে তো এমনও বলেছিলেন যে নোটবাতিলের মধ্যে কোনো গুরুতর অর্থনীতি নেই। এমনকী কোনো নির্দিষ্ট কারণও নেই যাতে বিষয়টিকে উপকারী মনে হবে। বিষয়টি নিয়ে তার একটি গবেষণাপত্রও রয়েছে। জিএসটি এবং করব্যবস্থা নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তাকে।
অন্যদিকে, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের কংগ্রেস ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও এদিন উঠে এসেছে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেসের প্রধান হাতিয়ার ছিল ন্যূনতম আয় নিশ্চয়তা প্রকল্প (ন্যায়)। রাহুল গান্ধীর এই প্রকল্পের পরামর্শদাতা ছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি তার মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্প। রাজস্ব ঘাটতির কথা মাথায় রেখে মাসে ২,৫০০-৩,০০০ রুপি ন্যূনতম আয় নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। যদিও, তা কংগ্রেসের পছন্দ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তা বাড়িয়ে ৬ হাজার রুপি করেছিলেন রাহুল গান্ধী।
সেই প্রসঙ্গে অভিজিৎ জানিয়েছিলেন, ‘আমার মতে ধীরে চলো নীতিতে রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলা করা সহজ হতো। কিন্তু নির্বাচন আসন্ন। সেই পরিস্থিতিতে সকলেই আরো দ্রুত নিজেদেরকে তুলে ধরতে চান।’ যদিও, ব্যক্তিগতভাবে ভর্তুকি অর্থনীতির পক্ষে ভালো নয় বলেও মনে করেন তিনি।
এদিন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। অধ্যাপক অভিজিত শুধু দেশকে গর্বিত করেননি, তিনি এবং তার নোবলজয়ী সহকর্মীরা ভারতসহ গোটা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা করেছে। তার নোবেল জয়ে প্রত্যেক ভারতবাসী আপ্লুত।’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে ট্যুইটারে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাহুল গান্ধীও। সেখানে ন্যায় প্রকল্পের প্রশংসার পাশাপাশি অর্থনীতি ধ্বংসকারী ‘মোদিনমিক্স’কে একহাত নিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, নোবেলজয়ী অভিজিৎ এবং তার স্ত্রী এস্থার ডাফলো, দুই অধ্যাপককে অভিনন্দন জানিয়েছে ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিউিট অব টেকনোলজি। তাদের কর্মপদ্ধতির প্রশংসাও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র : পিটিআই