আওয়ার ইসলাম: ভারত-শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রায় আড়াই মাস পর অঞ্চলটিতে আবার মোবাইল ফোন পরিষেবা চালু হতে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিবিসির বরাতে জানা যায়, সোমবার থেকে কাশ্মীরে মোবাইল নেটওয়ার্ক পুরোপুরি চালু করে দেওয়া হবে।
এদিন দুপুর থেকে কাশ্মীরের সর্বত্র পোস্ট-পেইড মোবাইল ফোনে আবার কথা বলা যাবে, তবে মোবাইল ইন্টারনেট এখনই চালু হচ্ছে না বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি সরকার।
তার আগের দিন থেকে কঠোর সামরিক নিরাপত্তা জারি করা হয় অঞ্চলটিতে। সেই সঙ্গে ইন্টারনেট সার্ভিস, ল্যান্ডফোন এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতদিন ধরে পুরো বিশ্বের সঙ্গে কাশ্মীরের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল।
মাসখানেক আগে ধীরে ধীরে কিছু ল্যান্ডলাইন চালু করা হলেও বন্ধ ছিল মোবাইল নেটওয়ার্ক।
রাজ্যটির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রোহিত কানসাল বলেন, ‘সব মোবাইল অপারেটরের পোস্ট-পেইড সেবার জন্যই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে এবং কাশ্মীর প্রদেশের দশটি জেলাই এর আওতায় আসবে।’
কাশ্মীরে গত সত্তর দিন ধরে এই ‘কমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউট’ এর ফলে ওই অঞ্চলের অর্থনীতি ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বিবিসিকে জানিয়েছেন।
এ ছাড়া মোবাইল ফোন সংযোগ না-থাকায় গত আড়াই মাসে কাশ্মীরিদের দৈনন্দিন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, অনেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বা ওষুধ পর্যন্ত কিনতে পারেননি, এর ফলে অনেক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
দিল্লিতে কাশ্মীরি গবেষক সাদাফ ওয়ানি বলেন, ‘আজই শুনলাম আমার এক বন্ধুর চাচা তার বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে বাড়িতে একাই ছিলেন-সে সময় চাচার হার্ট অ্যাটাক হয়।
মোবাইল নেটওয়ার্ক না-থাকায় তার বৃদ্ধ বাবা কাউকে যোগাযোগ করতে পারেননি, তাকে চোখের সামনে অসহায়ভাবে ছেলের মৃত্যু দেখতে হয়েছে। এটা জাস্ট গতকালের ঘটনা।’
পর্যটন ও আপেল চাষ- কাশ্মীরের অর্থনীতির প্রধান দুটি খাত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। মৌসুমের শেষ দিকে হওয়ায় যে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠাও এখন আর সম্ভব নয়।
এ ছাড়া কাশ্মীরের কার্পেট ইন্ডাস্ট্রিতে অর্ডার না আসায় ইতিমধ্যে ৫০ হাজার লোক কাজ হারিয়েছেন বলে শিল্প মালিকেরা জানিয়েছেন।
-এটি