আওয়ার ইসলাম: কাজু বাদাম একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। ভাস্কো দাগামার হাত ধরে আসা কাজু বাদাম আমাদের দেশে খুব একটা চাষ না হলেও এর চাহিদা কিন্তু মোটেও কম নয়। বাজার চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে কাজু বাদাম আসছে বিদেশ থেকে। কাজু বাদামে ভিটামিনের মাত্রা এতো বেশি থাকে, চিকিৎসকরা একে প্রকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেটও বলেন।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এক মুঠো কাজু বাদাম খেলে শরীরে পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়, সেই সঙ্গে পাওয়া যায় আরও নানাবিধ উপাকার। যেমন-
১. নার্ভের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বাদামে শরীরের থারা ম্যাগনেসিয়াম নার্ভের ক্ষমতা বাড়িয়ে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার ব্রেন পাওয়ার বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে ব্রেনের কগনিটিভ ফাংশনেরও উন্নতি ঘটে। ফলে বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগও বাড়তে শুরু করে।
২. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। কপার হল সেই খনিজ, যা চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের গোড়াকে শক্তপোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে কাজুতে। তবে এখানেই শেষ নয়, কাজু বাদামে থাকা কপার শরীরের অন্দরে এমন কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যা চুলের কালো রঙ ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
৩. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমে। কাজুতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা শরীরে প্রবেশ করে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন এতো মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
৪. ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি টিউমার যাতে দেখা না দেয় সেদিকেও খেয়াল রাখে। কাজু বাদামে থাকা প্রম্যান্থোসায়ানিডিন নামে একটি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। কাজুতে রয়েছে ওলিসিক নামে এক ধরনের মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা দেহে বাজে কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে দারুন কাজে আসে। তাই নিয়মিত এ বাদমটি খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৬. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে এই বাদামটি নিয়মিত খেলে হাড়ের শক্তি বাড়ে। সেই সঙ্গে বুড়ো বয়সে গিয়ে অস্টিওআর্থারাইটিসের মতো হাড়ের রোগ হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৭. ডায়াবেটিসকে দূরে রাখে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এক মুঠো করে কাজু বাদাম খাওয়া শুরু করলে দেহের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।
৮. সংক্রমণের আশঙ্কা কমায়। এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে থাকা জিঙ্ক, ভাইরাসের আক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই আপনি যদি এই ধরনের ইনফেকশনের শিকার প্রায়শই হয়ে থাকেন, তাহলে রোজের ডায়েটে কাজু বাদামের অন্তর্ভুক্তি ঘটাতেই পারেন।
৯. হার্টের ক্ষমতা বাড়ে। কাজু বাদামে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট একদিকে যেমন ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে, তেমনি নানাবিধ হার্টের রোগ থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যাদের পরিবারে হার্ট ডিজিজের ইতিহাস রয়েছে, তারা প্রয়োজন মনে করলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই পারেন।
১০. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের আদৌ বিকল্প নেই। তাই স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে খাবারের তালিকা ঠিক করতে হবে আগে। সূত্র: বোল্ড স্কাই।
-ওএএফ/এএ