মহিউদ্দীন ফারুকী ।।
পরিচিত অনেকেই গত কয়েক বছরে শিক্ষকতায় আত্মনিয়োগ করেছেন। এবছরও অনেকে তাদের শিক্ষকতার জীবন শুরু করেছেন। এ জাতীয় নবীন সকল শিক্ষকই একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চান। শিক্ষকতার অঙ্গনে সফল হতে চান। তবে কিভাবে এ সফলতা ধরা দিবে তা অনেকেরই অজানা।
একজন আদর্শ শিক্ষক হতে হলে কী করতে হবে, কীভাবে পড়াতে হবে তার অনেক কিছুই তারা জানতে চান। যদিও শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদানে আমার কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং দেশে ও মদিনায় শিক্ষকতায় আমার ছাত্রদের নিকট থেকে সফলতার সাক্ষ্য পেয়েছি তারপরও আমি এখনও নবীন। এ পথে কেবল মাত্র আমার যাত্রা। তাই শিক্ষকতায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং সফল হয়েছেন এমন একজন আদর্শ ও সফল শিক্ষকের কয়েকটি দিকনির্দেশনা তুলে ধরছি।
শায়খ আলী তানতাভী রহ.। দীর্ঘ জীবন শিক্ষকতা করেছেন। ছাত্রদের পড়িয়েছেন প্রায় একষট্টি বছর। তিনি ছিলেন একজন সফল শিক্ষক। এটা তার নিজের কথা নয়, বরং তার এ দীর্ঘ জীবনের ছাত্রদের সাক্ষ্য। এ সফলতার পেছনে মূল তিনটি কারণ তিনি তার আত্মজীবনিমূলক প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘জিকারায়াতে’ উল্লেখ করেছেন।
এক. একজন শিক্ষক যা পড়াবে তা অবশ্যই ভালোভাবে আত্মস্থ করে নিবে। সে বিষয়ে ভালো করে পড়াশোনা করে নিবে। তার হাতের কাছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যা পাবে তা পড়ে সে বিষয়ে একটি মজবুত ধারণা তৈরি করবে। শুধু দারসি কিতাব বা সিলেবাসের কিতাবের উপর কোনভাবেই নির্ভর থাকা চলবেনা। এতো হলো প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্তারের কথা। শিক্ষক যদি হয় উচ্চ স্তরের তাহলে শুধু দারসী বা সিলেবাসের কিতাবের উপর ক্ষান্ত থাকা কোনক্রমেই বৈধ হবেনা। যে এমনটি করে বা করবে তাকে সর্বোচ্চ প্রাইমারীর শিক্ষক বলা চলে।
দুই. যে বিষয়ে পাঠদান করবে তা ছাত্রদের বুঝাতে সর্ব প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করবে। যদি কোন বিষয় একভাবে বললে বুঝে না আসে তাহলে ভাষার ধরণ পরিবর্তন করে বলতে হবে যেন ছাত্ররা বুঝতে সক্ষম হয়। এতে করে বইয়ের ভাষা তার সামনে থাকলেও বিষয়টি তার মাথায় সহজে ঢুকে যাবে।
তিন. একজন সফল শিক্ষককে অবশ্যই স্বাভাবিক হতে হবে। সত্যবাদি হতে হবে। কোন কিছুতেই গোজামিল দেয়া একজন আদর্শ শিক্ষক বা সফল শিক্ষকের কাজ নয়। অতএব যদি কোন বিষয় জানা না থাকে তাহলে অকপটে ছাত্রদের বলে দিবে ‘আমি জানি না’। আর যদি কোন তথ্য প্রদানে বা কোন কিছু বুঝাতে কখনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে তা গোপন না করে ছাত্রদের বলে দেয় যে আমি ভুল করেছিলাম।
লেখক: পরিচালক, মারকাজুল লুগাতিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।
আরএম/