আওয়ার ইসলাম: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান অভিযানে বেশ কয়েকজন ক্যাসিনো ‘সম্রাট’ ধরা পড়লেও অনলাইনে এখনও পুরোদমে চলছে এ জুয়া খেলা।
দেশের বিভিন্ন জায়গার এ খেলা বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) শতাধিক জুয়ার সাইট বন্ধ করলেও ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে এ বেআইনি কাজ করে যাচ্ছেন জুয়াড়িরা।
তথ্য ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বিত উদ্যোগে বন্ধ করা সম্ভব অনলাইন ক্যাসিনো।
র্যাব এখনও রাঘব-বোয়ালদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাইলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করতে রাজি হয়নি।
গেল মাসের ১৮ তারিখ রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস ক্লাবে র্যাবের অভিযানে প্রথম সামনে আসে দেশে অবৈধ ক্যাসিনোর রমরমা ব্যবসা। ওই ক্লাব থেকে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এর সঙ্গে যুক্ত আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধান নামের একজনকে আটকের পর জানা যায় অনলাইন ক্যাসিনো সম্পর্কে।
অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা মূলত নেটেলার ব্যবহার করতেন। তবে এক্ষেত্রে ডলার কিনতে হলেও বেশিরভাগকেই কোনো না কোনো বাংলাদেশির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। কারণ এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি রয়েছে। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড ও ওয়্যার ট্রান্সফার ব্যবহার করেও লেনদেন করেন জুয়াড়িরা।
বাংলাদেশের অনলাইন জুয়াড়িদের পরিচিত ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে, বেট থ্রিসিক্সটি ফাইভ, বেট এশিয়া, ডাবলটু বেট, ত্রিপল এইট ক্যাসিনো, রয়্যাল ভেগাস ক্যাসিনো, জ্যাকপট সিটি ক্যাসিনো, ইইউ ক্যাসিনো, সান প্যালেস ক্যাসিনো, ভোগাস ক্যাসিনো, বেট উইনার, ওয়ানএক্স বেট।
এসব ওয়েবসাইটে কীভাবে জুয়া খেলতে হয় এবং কীভাবে পেমেন্ট করতে হয় সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পেজ ও দেশে কিছু ওয়েবসাইটও গড়ে উঠেছে।
কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পেমেন্টেও সহায়তাও পাওয়া যায় ওইসব পেজ ও ওয়েবসাইটগুলো থেকে। এছাড়া ক্রিকেট, ফুটবল, রাগবি ম্যাচ চলাকালে লাইভ বাজি ধরার সব ধরনের উপায়ই বাতলে দেয় এসব পেজ ও ওয়েবসাইটগুলো।
ভিপিএন বন্ধ না করেও কীভাবে জুয়াড়িদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেশিরভাগ অনলাইন ক্যাসিনো দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত হয় এবং সেখানে টাকা লেনদেন হয়।
এখন অনেকেই ওয়্যার ট্রান্সফার ব্যবহার করে এই লেনদেন করেন। ওয়্যার লেনদেনে যেহেতু সুইফট কোড ব্যবহার করে লেনদেন করতে হয়।
তাই টাকাটা কোন উৎস থেকে ব্যক্তির কাছে আসলো কিংবা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা কোন উৎস গেল তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পারে।
তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে এই উৎস বের করে অনলাইন জুয়াড়িদের আইনের আওতায় আনতে পারে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সময়নিউজকে বলেন, ক্যাসিনো বিষয়টি নিয়ে আমি এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
-এটি