আওয়ার ইসলাম: মানুষ নিত্য নতুন কত জিনিসের আবিস্কার করছে। এর ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার শরীরে সূচ ফোটাতে কার না ভয় লাগে? শিশুরা তো চিৎকার জুড়ে দেয়। কিন্তু জন্মের পর অন্তত দুই তিন বছর ধরে প্রায় নিয়মিতই বিভিন্ন রকমের টিকা দিতে সূচ ফোটাতেই হয় শিশুর শরীরে। আর যারা ইনস্যুলিন নেন, তাদেরও বিশেষভাবে তৈরি একটি সূচ (নিড্ল) নিয়মিত শরীরে ঢোকাতে হয়।
তাই চিকিত্সকরাও খুব প্রয়োজন না হলে শরীরে সূচ ফোটাতে চান না। যদি এমন সূচ বা ইঞ্জেকশন ব্যবস্থা তৈরি করা যায়, যা একটুও কষ্ট দেবে না বা আপনি বুঝতেই পারবেন না কখন শরীরে ঢুকেছে সূচটি, তা হলে কেমন হয়?
ইঞ্জেকশনে ভয় পাওয়ার সময় আপনি কিন্তু খেয়ালও করেননি, আমাদের বুঝতে না দিয়ে কেউ কেউ হামেশাই ‘সূচ’ ফোটাচ্ছে আমার, আপনার শরীরে। তারা আর কেউ নয়, মশা। আমাদের শরীরে যখন মশা হুল ফোটায়, প্রথমে আমরা তা বুঝতেই পারি না। মশা রক্ত খেয়ে উড়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারি। তা হলে কি মশা কোনও বিশেষ কৌশল জানে? যা হুল ফোটানোর সময় আমাদের টের পেতে দেয় না।
মশার কাছ থেকে শেখা! মশার সেই কৌশলকে সামনে রেখেই যন্ত্রণাহীন নতুন ইঞ্জেকশন ব্যবস্থা তৈরির পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন কয়েকজন বাঙালি বিজ্ঞানী।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ভারতের কানপুর আইআইটি-র কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক অনিমাংশু ঘটক ও খড়গপুর আইআইটি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী আলাদা আলাদা ভাবে গবেষণা চালিয়েছেন মশার সেই কৌশল বুঝতে।
অনিমাংশুর সঙ্গে রয়েছেন তার দুই সহকর্মী কৃষ্ণকান্ত কুন্দন ও সুকুমার লাহা। অনিমাংশু ও তার সহযোগীদের গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘এক্সট্রিম মেকানিক্স লেটার্স’-এ।
আর সুমন তার কাজটি শুরু করেছিলেন জাপানে কানাগাওয়ার তোকাই বিশ্ববিদ্যালের অধ্যাপক কাজুওশি সুচিয়া-র সঙ্গে। এখন সুমন খড়গপুর আইআইটি-তে যন্ত্রণাহীন সূচ তৈরির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জার্নাল অফ অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স’-এ ছাপা হয়েছে সুমনদের গবেষণাপত্র।
দু’জনের লক্ষ্য এক হলেও অনিমাংশু ও সুমন আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে ইঞ্জেকশনের যন্ত্রণা কমানোর বা নির্মূল করার চেষ্টা করছেন।
-এটি