আওয়ার ইসলাম: ভোলায় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে তথাকথিত আহলে হাদিস ও ঈমান আকিদা সংরক্ষণ কমিটির নেতৃবৃন্দ। আহলে হাদিসের কার্যক্রম নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গত দু’দিন ধরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে তথাকথিত আহলে হাদিস তথা লা মাজহাবি-সালাফি মতবাদ প্রচারের নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে ঈমান আকিদা সংরক্ষণ কমিটি।
সভাপতি বশির উদ্দিন ও সম্পাদক মাওলানা তাজউদ্দিন ফারুকী লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। দীর্ঘ যুগ যুগ ধরে আমরা শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন করে যাচ্ছি। সম্প্রতি তথাকথিত আহলে হাদিস তথা লা-মাজহাবি ও সালাফি অনুসারীরা সামাজিক শৃঙ্খলা এবং মুসলিম ঐক্য বিনষ্টের জন্য ধর্মীয় বিরোধ সৃষ্টির অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আর ইসলামের নাম দিয়ে যারা ধর্মীয় বিভেদ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, আহলে হাদিস কমপ্লেক্স থেকে কামরুল ইসলাম বাবুল রমজান মাসে ইফতারের আধা ঘণ্টা আগে আজান ও বিকাল ৩টার সময় আসরের আজান প্রচার করে থাকে। যার ফলে এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ তার সে আস্তানাটি ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তীকালে কামরুল এলাকার ১৯ জন নিরহ মুসল্লির নামে একটি মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে। তারা কাউকে কাউকে খুন ও গুমের হুমকি দেয়। এছাড়াও ভোলায় আহলে হাদিসের বিতর্কিত আস্তানা স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবিসহ কামরুলের গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
মাওলানা তাজ উদ্দিন বলেন, যুগ যুগ ধরে মুসলমানরা যে কালেমা পড়ে আসছে সে কালেমা নাকি শেরেকী কালিমা বলেও অপপ্রচার চালাচ্ছেন কামরুল। এটি নিয়ে ওই এলাকায় দীর্ঘদিন বিশৃঙ্খলা চলে আসছে। বিষয়গুলো নিয়ে ভোলার আলেম সমাজ বেশ কয়েকবার প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। কিন্তু কামরুলের এ অপতৎপরতা বন্ধ হয়নি। এ নিয়ে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই আমরা বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে কামরুল ইসলাম বাবুলকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
অপর দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা নুর ই আলম জানান, মাসলা মাসায়েল বিষয় নিয়ে গত ২০১৮ সনের ১১ জুলাই এলাকার ছগির বাহিনীর নেতৃত্বে কতিপয় ব্যক্তি মসজিদে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় মসজিদটি।
'এ ঘটনায় মামলা করলে বাদী মুক্তিযোদ্ধা নুর ই আলমকে মারধর করে। তারা মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধার ছেলে কামরুল ইসলামকে একের পর এক হুমকি দিচ্ছে। হুমকির মুখে সে এখন এলাকায় থাকতে পারছে না। আগামী ১ অক্টবর মামলার তারিখ বাদী পক্ষ যাতে আদালতে যেতে না পারে তার জন্য নানারকম ভয়ভীতিসহ গুম করার হুমকি দিচ্ছে।'
সংগঠনের সম্পাদক কামরুল ইসলাম আরও জানান, তারা ইসলাম ধর্মের সকল অনুশাসন মেনে চলছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন। মূলত জাকির নামের এক ব্যক্তির কাছে তিনি ৫ লাখ টাকা পান। ওই টাকা চাওয়ায় জাকিরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আহলে হাদিসের মসজিদে হামলা করে। বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা নিরাপত্তা কামনা করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরএম/