শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


জাতিসংঘে খানের ভাষণের পর মোদি বিরোধী স্লোগানে উত্তাল কাশ্মীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জাতিসংঘ ভাষণের পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের চলাচলের ওপর ফের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ইমরানের ভাষণের পর রাতে শত শত কাশ্মিরি ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করে শ্লোগান দেয়। এরপর শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে পুলিশ প্রসাশন।

এদিকে, কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে মাত্র ২৪ ঘন্টায় ২৩ টি বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে কাশ্মীরিরা। পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর ওই ভাষণের পর ওই দিন (শুক্রবার) রাতে কাশ্মিরের স্বাধীনতার ডাক দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে শত শত কাশ্মিরি। এবং তারা ইমরানের পক্ষে শ্লোগান দেয়। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) একটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরে শ্রীনগরে বিক্ষোভের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে গত রাতে এবং আজ আটটি বিক্ষোভ ছিল। বিক্ষোভকারীরা মসজিদে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদেরও স্লোগান দেয়।

প্রসঙ্গত, ৭৪তম জাতিসংঘ অধিবেশনে ভাষণে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলসহ অঞ্চলটিতে সরকারের চলমান দমননীতির কঠোর সমালোচনা করেন ইমরান খান। কাশ্মিরে ব্যাপক পরিমাণের সামরিকায়ন ও অব্যাহত নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে তিনি বলেন, কারফিউ তুলে নিলে সেখানে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। ইমরান বলেন, শেষ পর্যন্ত দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান ও ভারত পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হলে পুরো বিশ্বকেই এর ফল ভোগ করতে হবে।

পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে,‘শনিবার শ্রীনগরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ভ্যান থেকে স্পিকারের মাধ্যমে জনসাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ সংক্রান্ত বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। বিক্ষোভ প্রতিরোধে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রীনগরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রে প্রবেশাধিকার বন্ধ করেছে সেনারা।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ইমরান খানের বক্তব্যের পর গত রাতে শ্রীনগরজুড়ে বিক্ষোভের পর এটা (বিধিনিষেধ) জরুরি হয়ে পড়েছিলো।’

ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘গত রাতে শ্রীনগরের নিকটবর্তী সৌরা অঞ্চলসহ কিছু এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছিলো, সংঘর্ষের সময় সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর তারা পাথর ছুঁড়ে মারে। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।’

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপকে ঘিরে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। এখনও আটক রয়েছেন সেখানকার শত শত নেতাকর্মী।

অভিযোগ উঠেছে, এরপর থেকেই সেখানে সংবাদমাধ্যমের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে বেসামরিক মানুষের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। নির্যাতনের শিকার হয়ে কয়েকজনের মৃত্যুর খবরও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ভারত। কাশ্মিরে ভারতের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কারের পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কও স্থগিত করা হয়েছে।

সূত্র: আনাদুলু, রয়টার্স।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ