শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

'শ্রোতাদের ভালোবাসা পাওয়াটাই আমার উদ্দেশ্য থাকে'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু উবায়দা। এ সময়ের জনপ্রিয় তরুণ কণ্ঠশিল্পী। মাত্র কয়েকটি গানের মাধ্যমে ইসলামি সংগীত জগতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি। কথাতে ভুল হলে, খোদার কথা, সাদা কাফন, আমার বড় কষ্ট হয়’ তার এই গানগুলো শ্রোতাদের মন মাতাতে সক্ষম হয়েছে। সাংস্কৃতিক জগতে কাজের অভিজ্ঞতা এবং দর্শক শ্রোতাদের অপ্রত্যাশিত ভালোবাসার কথা আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন এই গুণী শিল্পী। তার সঙ্গে আলাপচরিতায় ছিলেন মাহমুদুল হাসান


আওয়ার ইসলাম: সংগীত জগতে কিভাবে আসা হলো?

আবু উবায়দা : আমার সংগীতে আসাটা আসলে সেই ছোট বেলার গুন গুন থেকে। আমার শৈশব কেটেছে জামিয়া ইমদাদিয়ার কোয়াটারে। আমার আব্বা ছিলেন জামিয়ার হিফজ বিভাগের সিনিয়র উস্তাদ। সাত ক্বেরাতের ক্বারি ছিলেন তিনি। আর আম্মা মরহুমা খুব সুন্দর নাত গাইতে পারতেন।

আম্মার মুখে রাসুলের প্রসংশা গাঁথা সংগীতগুলো শুনতাম। ঠিক বলতে গেলে আম্মার মুখে গজল আর আব্বার তিলাওয়াত আমাকে মুগ্ধ করত। তাই আমিও গাইতে চেষ্টা করতাম। সে সময় আমার গাওয়াটা কেমন হতো তা জানি না। তবে আমার আম্মা খুব পছন্দ করতেন৷, আমাকে উৎসাহ দিতেন। পাশাপাশি মানুষের মুখেও খুব প্রসংশা পেতাম। এভাবেই আমার সংগীতে আসা।

আমার মনে আছে, আমি যখন একটু-আধটু সংগীত করতে শুরু করেছি তখন আবেগের বসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। জীবনের প্রথম কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সাইফুল্লাহ মানসুর সাহেবের লেখা 'হিজল বনে পালিয়ে গেছে পাখি' সংগীত গেয়ে আমি বিভাগীয় পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ! সেই সময়কার স্মৃতি আমাকে আজও অনুপ্রেরণা দেয়।

আওয়ার ইসলাম: এখন পর্যন্ত কতটুকু কাজ করতে পেরেছেন?

আবু উবায়দা: সংগীত নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন ব্যাপক। কাজ করতে চাই। এ্যালবাম করার ইচ্ছা আছে। যেহেতু এটা মিউজিক ভিডিওর যুগ, একারণে ইতোমধ্যে আমি উবায়দা প্রোডাকশন নামে নিজস্ব স্টুডিও করেছি। স্টুডিও থেকে বেশ কিছু সংগীত আমার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল উবায়দা প্রোডাকশন এবং দেশের অন্যতম ইসলামিক ইউটিউব চ্যানেল হলি টিউনে প্রকাশ হয়েছে।

হলি টিউনে প্রকাশিত 'গোলাপ নিলাম' সংগীতটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সংগীত নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমি বিশেষভাবে কালজয়ী সংগীতগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখি, যেগুলো মানুষকে টানে যাদুর মতো৷ সব শ্রেণী=পেশার মানুষ যেখানে আত্মার খোরাক পায়।

আওয়ার ইসলাম: একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে কতটা বড় হতে চান?

আবু উবায়দা: একজন শিল্পী হিসেবে আমি নিজেকে বড় করে দেখার চেয়ে শ্রোতাদের ভালোবাসা পাওয়াটা বেশি কামনা করি৷ শিল্পী হয়ে কিছু করব, সেই স্বপ্ন আমি দেখি না। শ্রোতাদের আত্মার ভালোবাসা পাওয়াটাই আমার উদ্দেশ্য থাকে এবং সেটা আমি পাই।

ইতোমধ্যে দেশ বিদেশের সিনিয়র শিল্পীদের ভালোবাসা মিশ্রিত আদেশ উপদেশ আমাকে সংগীত করতে আরও বেশী সহযোগিতা করছে। আমি শিল্পী পরিচয়টা কখনো নিজের প্রফেশন হিসেবে নিতে চাই না। সংগীত গেয়ে শুধু মানুষের হৃদয়ে নিজের স্থানটা পাকাপোক্ত করতে চাই।

আওয়ার ইসলাম: ইউটিউবে আপনার ‘সাদা কাফন’ গানটির ভিডিও অনেক প্রশংসিত হয়েছে। এ সম্পর্কে আপনার অনুভূতি কি?

আবু উবায়দা: "সাদা কাফন" সংগীতটি নিয়ে বলতে গেলে প্রথমত আমি এই সংগীতটি আমার আম্মা এবং আব্বাকে কেন্দ্র করে লিখি। আমি যখন কারও জানাজায় যাই, যখন কেউ আমাদের রেখে চলে যান, সেই চলে যাওয়াটাকে নিয়ে ভাবতে চেষ্টা করি।

খুব স্বাভাবিকভাবে মানুষের মৃত্যু হয়ে যায়, অথচ সেটা নিয়ে আমরা ভাবি না। আমি ঠিক মানুষকে সেই ভাবনা বুঝাতে চেয়েছি। সেখান থেকেই এই সংগীতটি নিজে লিখে সুর করে প্রকাশ করি।

সংগীতটি মানুষের কাছে এভাবে সমাদৃত হবে তেমনটি আশা করিনি। আমি শুধু আমার ব্যথিত হৃদয়ের অব্যক্ত যন্ত্রণার কথাগুলো বলতে চেষ্টা করেছি। মরমি সংগীত হিসেবে শ্রোতারা এটাকে খুব আপন করে নিয়েছেন৷ পাশাপাশি আমাকেও কল্পনাতীত ভালোবাসা দিয়ে ঋণি করেছেন।

আওয়ার ইসলাম: সংগীতচর্চার পাশাপাশি আর কী করছেন?

আবু উবায়দা: সংগীত চর্চার পাশাপাশি আমি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। ডিজাইনার হিসেবেই কাজ করছি। আমি সবসময় মানুষকে ভালোবাসতে চেষ্টা করি। পরিচিত-অপরিচিত সবার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে। ভালোবাসা দিয়ে মানুষের ভেতরে প্রবেশ করতে।

আওয়ার ইসলাম: ব্যক্তিগতভাবে কার সংগীত আপনাকে মুগ্ধ করে বা কার সংগীত বেশি শোনা হয় ?

আবু উবায়দা: সবসময় আমি ব্যতিক্রমী কিছু শুনি এবং খুঁজি। উর্দু নাশীদ, কাওয়ালী, কালজয়ী নাতে রাসুল, নজরুল সংগীত বেশি ভালো লাগে। মিশারি আল আফাসিকে বেশি শোনা হয়। আমি তাকে শুনে মুগ্ধতা পাই৷ এ ছাড়াও সাইফুল্লাহ মানসুর, মশিউর রহমান, নৌশাদ মাহফুজ, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান এবং আবু রায়হানকেও শুনি।

আওয়ার ইসলাম: হাতে কী কী কাজ আছে এখন?

আবু উবায়দা: সংগীত নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ হাতে৷ খুব অল্পসময়ের মধ্যেই শ্রোতাদেরকে দিতে পারব আশা করছি। বেশ কয়েকটি সংগীতের কভার করা হয়েছে। সামনে রমজানের জন্যও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে কাজ চলছে৷ সবগুলোই আমার স্টুডিও উবায়দা প্রোডাকশন থেকে করা হচ্ছে।

আওয়ার ইসলাম: আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

আবু উবায়দা: আওয়ার ইসলাম পরিবারের প্রতি আমারও ধন্যবাদ।

নন মিউজিক্যালি ভালোবাসার গান ‘কথাতে ভুল হলে’ (ভিডিও)

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ