আওয়ার ইসলাম: নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের শহর কাদুনাতে ইসলামিক শিক্ষার একটি স্কুল থেকে প্রায় ৩০০ জন বন্দী শিশুকে উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। তাদের অধিকাংশের বয়সই ৫ বছরের নিচে। নাইজেরিয়ান পুলিশের বরাত দিয়ে শুক্রবার খবরটি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, উদ্ধারকৃতদের সবার বয়স ৫ বছরের নিচে। অধিকাংশের পায়ে লম্বা শিকলসমেত বেড়ি পড়ানো ছিল। কয়েকজনের আবার দুটি পা একসঙ্গে বাঁধা ছিল।
সূত্রমতে, স্কুলটিতে ইসলামিক শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হতো। বৃহস্পতিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে সাতজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। শিশুগুলো কতদিন ধরে বন্দী ছিলো, পুলিশের পক্ষে এখনও তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
কাদুনা পুলিশের মুখপাত্র ইয়াকুবা সাবো বলেন, 'প্রাদেশিক সরকার ইতিমধ্যে উদ্ধারকৃত শিশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে। আমরা দুজন শিশুকে সনাক্ত করেছি যারা রাজধানী বুরকিনা ফাসো থেকে এসে স্কুলটিতে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বাকিদের বেশিরভাগ দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রদেশগুলো থেকে এসেছে। তাদের মা-বাবারাই তাদের এখানে ভর্তি করে গিয়েছে।' গ্রেফতারকৃত ৭ জন ঐ স্কুলেরই শিক্ষক বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
স্থানীয় সংবাদসূত্রগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, শিশুগুলোকে বন্দী অবস্থায় মারধর ও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। দিনের পর দিন তাদের খেতে দেওয়া হয়নি। তাদের অধিকাংশের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, ইসলাম শিক্ষার এই স্কুলগুলোকে নাইজেরিয় ভাষায় আলমাজিরিস বলা হয়। পুরো দেশজুড়েই আলমাজিরিসগুলো বিস্তার লাভ করেছে আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত মুসলিমপ্রধান দেশটিতে। নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের জনগণ দিনে মাত্র ২ ডলারেরও কমে জীবনযাপন করে থাকে। একারণে বেশির ভাগ মা-বাবাই তাদের সন্তানদের এ ধরনের স্কুলগুলোতে পাঠিয়ে থাকে বিনামূল্যে শিক্ষাগ্রহণের জন্য।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিশুগুলোকে কাদুনার একটি স্টেডিয়ামে সাময়িক ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তাদের স্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের মা-বাবাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যে কয়েকজনের বাবা-মা তাদের সন্তানদের বাড়ি ফিরিয়ে নিতে এসেছে। সেসব বাবা-মা বলেন, 'আমরা জানতাম না, আমাদের সন্তানগুলোকে তারা এভাবে নির্যাতন করে।'
আরএম/