আওয়ার ইসলাম: ইরানি নারী সাহার খোদায়ারি। ছদ্মবেশ ধরে স্টেডিয়ামে ছুটে গিয়েছিলেন খেলা দেখতেন। কিন্তু স্টেডিয়ামে প্রবেশের আগেই ধরা পড়ে যান নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে।
আর তাতেই চটে যায় দেশটির আদালত। পুরুষ সেজে স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করায় ছয় মাসের সাজা হয় তার। এ রায় শুনে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করলেন ওই নারী ফুটবল ভক্ত।
গত শুক্রবার রায় শুনে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন ওই নারী। এতে তার শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সাহার খোদায়ারি মারা যাওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনী তাকে দ্রুত সমাহিত করে।
এদিকে, ইরানি ওই নারীর আত্মহত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট আদালত এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি তুলেছেন অনেকে।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে’র খবরে বলা হয়েছে, ‘ব্লু গার্ল' নামে পরিচিতি ২৯ বছর বয়সী ওই নারী গত মার্চে তার প্রিয় ইরানি ফুটবল ক্লাব এস্তেগলালের খেলা দেখতে পুরুষের বেশ ধরে স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করেন। নীল রঙের পরচুলা পরেছিলেন তিনি, গায়ে ছিল ওভারকোট, তারপরও স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় ধরা পড়ে যান।
গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত হন সাহার খোদায়ারি। কিন্তু গত সপ্তাহে তার ছয় মাসের সাজার রায় দেন আদালত। এরপর আদালতের বাইরে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। হাসপাতালে ব্যান্ডেজে মোড়ানো খোদায়ারির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির বিচার বিভাগ এই মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
এ ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ওই নারীর বাবা-মাকে জানিয়েছে, তাদের মেয়ে ইতোমধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীকে যথেষ্ট ভোগান্তি দিয়েছে। এ বিষয়ে তাদের কাছ থেকে আর কিছু শুনতে চায় না নিরাপত্তা বাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এই নারীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তার মৃত্যুর জন্য সংশ্লিষ্ট আদালত এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
ফুটবল ক্লাব এস্তেগলাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তার খুব ছোট্ট একটি ইচ্ছা পূরণের জন্য তাকে কবরে যেতে বাধ্য করা হলো।’
ইতিমধ্যে ইরানকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করতে ফিফার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন দেশটির অনেকে।
প্রসঙ্গত, ইরানের নারীদের স্টেডিয়ামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দিলেও দেশটির ধর্মযাজকদের বিরোধিতার কারণে তিনি তা করতে পারছেন না।
-এটি