আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সব বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়েছে মিয়ানমার। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, রোহিঙ্গা গ্রাম হিসেবে পরিচিত ওইসব এলাকায় বানানো হচ্ছে পুলিশের ব্যারাক, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও আশ্রয় কেন্দ্র।
তবে, এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মিয়ানমার সরকার। স্যাটেলাইট ইমেজ বলছে, ২০১৭ সাল থেকে ৪০ শতাংশ রোহিঙ্গা গ্রাম ধ্বংস করা হয়েছে।
প্রত্যাবাসন চুক্তির পরও সুরাহা হয়নি রোহিঙ্গা সংকটের। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সম্প্রতি দ্বিতীয় দফার উদ্যোগও ব্যর্থ হয়, তালিকাভুক্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার রোহিঙ্গার কেউই নিজ দেশে ফিরতে রাজি না হওয়ায়। এর জন্য বাংলাদেশের অনাগ্রহকে দায়ী করে মিয়ানমার।
এরপরই, নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইতে বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য সফর আয়োজন করে মিয়ানমার। এর অংশ হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুত করা আশ্রয় শিবির ঘুরিয়ে দেখানো হয়।
রাখাইনে বিদেশি সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে তথ্য সংগ্রহের সুযোগ না থাকলেও কড়াকড়ির মধ্যেই ভয়াবহ তথ্য বের করে এনেছেন বিবিসির প্রতিবেদক জোনাথন হেড। রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখে তার দাবি, অন্তত চারটি এলাকায় রোহিঙ্গা নির্মূল প্রচেষ্টার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।
ওইসব এলাকা একসময় রোহিঙ্গা গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিল, তবে এখন রোহিঙ্গা বসতির কোন চিহ্নই নেই।
সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে সেনা ঘাঁটি, সরকারি ভবন। ধ্বংস করে দেয়া এধরনের দুটি গ্রামেই নির্মাণ করা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ট্রানজিট ক্যাম্প। সরকারি হিসেবে এই ক্যাম্পের ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার হলেও বিবিসি বলছে, এগুলোর বেশিরভাগের অবস্থাই খুব খারাপ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে সুচি সরকার। তবে স্যাটেলাইট ছবি পর্যবেক্ষণ করে অস্ট্রেলিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউট বলছে, ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের ৪০ ভাগ গ্রাম ধ্বংস করা হয়েছে।
মংডু শহরের কাছেই মিও থু গি এলাকায় একসময় যেখানে ৮ হাজার রোহিঙ্গার বাস ছিল সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। জাতিসংঘও বলছে, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের নামে সেনাবাহিনী স্পষ্ট করেই রোহিঙ্গা নিধনে লিপ্ত ছিল।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে হয় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
-এটি