আবদুল্লাহ তামিম ♦
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাটির মসজিদ আফ্রিকায় অবস্থিত। ‘গ্র্যান্ড মস্ক অব ডিজেনি’ নামে খ্যাত মসজিদটি। ১২০০ শতাব্দী থেকে ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মসজিদটি নির্মাণের পক্ষে অধিকাংশ মতের সমর্থন পাওয়া যায়। সুলতান কুনবুরু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার প্রাসাদটি ভেঙে সেখানে মসজিদটি তৈরি করেন তিনি।
জানা যায়, মসজিদের দেয়ালগুলো তালগাছের কাঠ দিয়ে নকশা করা। যা স্থানীয়ভাবে ‘টরল’ নামে পরিচিত। এগুলো এমনভাবে গেঁথে দেয়া হয়েছে যাতে মাটির দেয়াল সহজে ধসে না যায়। হাজার হাজার শিক্ষার্থী কোরআন শিক্ষার জন্য এই মসজিদে আসতেন।
শৈল্পিক স্থাপত্য হিসেবে বিশ্বের অনেক মসজিদের খ্যাতি আছে। এ শৈল্পিক সৌন্দর্য শুধু বর্তমানের আধুনিক সময়ের জন্যই নয়, আদি যুগ থেকে চলে আসছে। নির্মাণশৈলীর দিক দিয়ে বিশ্বে শত শত বছরের পুরনো মসজিদ রয়েছে।
এখনও মানুষকে মুগ্ধ করে। এমন অনেক মসজিদের মধ্যে অন্যতম বিস্ময় হচ্ছে পৃথিবীর বুকে মাটি দিয়ে তৈরি সবচেয়ে বড় মসজিদ। মাটির তৈরি বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদটির অবস্থান আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলে ডিজেনি শহরে।
মসজিদটি প্রথম কবে নির্মাণ করা হয়েছিল সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না। তবে ১২০০ শতাব্দী থেকে ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মসজিদটি নির্মাণের পক্ষে অধিকাংশ মতের সমর্থন পাওয়া যায়।
জানা যায়, সুলতান কুনবুরু ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার প্রাসাদটি ভেঙে সেখানে এই মসজিদটি তৈরি করেন। মসজিদের পূর্বদিকে নিজের বসবাসের জন্য একটি প্রাসাদ তৈরি করেন। তার পরবর্তী উত্তরাধিকারী এ মসজিদের দুটি মিনার এবং চারপাশের দেয়াল নির্মাণ করেন।
১৮২৮ সালে ফরাসি পর্যটক রেনের এ এলাকা সফরের আগ পর্যন্ত মসজিদটি সম্পর্কে লিখিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। রেনে তার সফর শেষে লিখেছিলেন, ডিজেনি শহরে মাটির তৈরি একটি মসজিদ আছে। এর দু’পাশে দুটি দর্শনীয় কম উচ্চতার মিনার আছে। এরপর থেকেই মাটির এই মসজিদ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
বানি নদীর তীরে অবস্থিত মসজিদটি ২৪৫ ফুট আয়তনবিশিষ্ট ৩ ফুট উঁচু কাঠামোর ওপর নির্মিত। বর্ষাকালে বানি নদীর প্লাবিত পানি থেকে মসজিদটিকে সুরক্ষা করে এই কাঠামো।
মসজিদের দেয়ালগুলো তালগাছের কাঠ, যা স্থানীয়ভাবে ‘টরল’ নামে পরিচিত, সেগুলো দিয়ে নকশা করা। শুধু নকশা নয়, তালগাছের কাঠ মসজিদের দেয়ালে এমনভাবে গেঁথে দেয়া হয়েছে যাতে মাটির দেয়াল সহজে ধসে না যায়।
মধ্যযুগে আফ্রিকার এই অঞ্চলে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল এই মসজিদ। হাজার হাজার শিক্ষার্থী তখন কুরআন শিক্ষার জন্য এই মসজিদে আসতেন।
প্রতি বছর স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্যোগে মসজিদটির সংস্কার কাজ চলে। ২০০৬ সালের ২০ জানুয়ারি মসজিদের ছাদের একটি অংশ এবং ২০০৯ সালের ৫ নভেম্বর এর দক্ষিণ দিকের মিনারের একটি অংশ ধসে পড়লে ‘দি আগা খান ট্রাস্ট কালচার’ নিজস্ব খরচে এটির সংস্কার করে। ১৯৮৮ সালে ইউনেস্কো এই মসজিদটিসহ এর চারপাশের ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
-এটি