মোস্তফা ওয়াদুদ: আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে গত ৩ জুলাই বুধবার। কেন্দ্রীয় পরীক্ষার সারাদেশে মহিলা শাখায় মেধা তালিকায় চতুর্থ হয়েছেন বরিশালের উম্মুল খায়ের হাফসা। তার বাবার নাম মুফতী আব্দুল বাতেন মিয়াজী। মা মোর্শেদা বেগম।
হাফসা ২০০৩ সালের ১ মে বরিশাল জেলার হিজলা থানার বড়জালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। লেখাপড়ার শুরুটা হয়েছিলো উম্মুল কোরা মাদরাসা, সারুলিয়া, ডেমরা, ঢাকায়। বর্তমানে মাহমুদিয়া মহিলা মাদরাসা, মাহমুদনগর, ডগাইর, ডেমরা, ঢাকায় শিক্ষকতা করছেন তিনি। তার প্রথম শিক্ষক ছিলেন হাফেজ মাওলানা সাইফুল ইসলাম রহিমাহুল্লাহ। হাফসা পড়াশুনার শুরু থেকেই ভালো ছাত্রী ছিলেন। সব সময় ক্লাসে সিরিয়ালে থাকতেন।
হাফসার মামা মাওলানা সুলতান মাহমুদ আশরাফীর মাধ্যমে জানতে চেয়েছিলাম, ক্লাসের বাইরে তার আগ্রহ কোন বিষয়ের প্রতি। জানালেন, ক্লাসের বাইরে বিশ্বনবি সা. ও সাহাবীদের জীবনী পড়তে বেশি ভালো লাগে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রিয় নবির আদর্শ আনুযায়ী জীবন গড়া আমাদের উদ্দেশ্য। আর সাহাবায়ে কেরাম হলেন নববী আদর্শের জীবন্ত নমুনা। তাই তাদের জীবনী বেশি পড়ি।
ছাত্রী থাকাকালে পড়াশোনা ও কাজের জন্য রুটিন ফলো করতেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যা, খুব যত্নের সাথে রুটিন মেনে করে সবকিছু করার চেষ্টা করেছি।।
সারাদেশে চতুর্থ হওয়ার অনূভূতি কেমন? বললেন, আমি তো নালায়েক। দয়াময় রবের কৃপাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। কেমন সহযোগিতা পেতেন ছাত্রীবান্ধবীদের থেকে? জানালেন, তারা সব সময় আমাকে সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন। তাদের প্রতি আমি অনেক বেশি কৃতজ্ঞতা।
পাঠ্যবই ছাড়া কিসের প্রতি ঝোঁক বেশি? এ প্রশ্নের উত্তরটি ব্যতিক্রমভাবে দিলেন তিনি। বললেন, ব্যাকরণের প্রতি বেশি ঝোকঁ। কারণ বাংলা সাহিত্যের প্রতি আমার আকর্ষণ ভিন্ন রকম। সময় পেলেই গল্পের বই ও ব্যাকরণ নিয়ে বসে যাই।
হাইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় সফলতার পেছনে মূল মেহনত কী ছিলো? জানালেন, শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের পরামর্শই ছিলো আমার মেহনতের প্রধান ধারা। তারা যেভাবে বলতেন সেভাবেই পড়ার চেষ্টা করতাম। তার উস্তাদদের সম্পর্কে জানতে চাইলে বললেন, তাদের কারণেই আজ আমি এখানে। আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম বিনিময় দিন।
আপনার প্রিয় উস্তাদজী কে? কেনো তিনি প্রিয়? এমন প্রশ্ন করলে সাইনবোর্ড মাদরাসা ও মাহমুদিয়া মহিলা মাদরাসা এর মুহতামিম মুফতি শফিকুল ইসলাম সাহেব এর নাম বললেন। কারণ হিসেবে তাকে নববি আদর্শের উপমা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার কথাগুলোর মাঝে আমি নববি আদর্শ খুঁজে পাই।
সর্বশেষ তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আপনি জীবনে কী হতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. এর মত আলেমা, আবেদা হতে চাই।
-এএ