শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

অঙ্গ প্রতিস্থাপন, ইসলাম কী বলে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: মানুষের দেহের কোনও অঙ্গ অকেজো হয়ে গেলে সেটা বাদ দিয়ে সেখানে কোনও সুস্থ অঙ্গ প্রতিস্থাপন (transplant) করা যায় কিনা সে নিয়ে গবেষণা বহুদিনই চলছিল। বছর ষাটেক আগে পশুদের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে কিছুটা সাফল্য আসে। কিন্তু তখনও বোঝা যায় নি যে, ব্যাপক হারে মানুষের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে।

এখন তো টাকা হলেই এটা সম্ভব। দিন দিন ব্যাপকতা লাভ করছে এ অঙ্গ প্রতিস্থাপন। বর্তমান সময়ে অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্টেশনের একাধিক সূরত রয়েছে। যেমন-

১. মানুষের অঙ্গ ব্যতীত জড় পদার্থ যেমন লোহা পিতলের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা।
২. মানুষের অঙ্গ ব্যতীত হালাল প্রাণী যেমন বকরী ইত্যাদির অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা।
৩. মানুষের অঙ্গের বদলে কোন হারাম প্রাণী যেমন কুকুর, শুকরের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা।

৪. মানুষের এক অঙ্গ কর্তন করে তার অন্য অঙ্গে প্রতিস্থাপন করা।
৫. কোন সুস্থ্য মানুষের কোন অঙ্গ কর্তন করে আরেক অসুস্থ্য ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা।

উপরোক্ত ৫ সূরতের মাঝে ১ম, ২য় এবং ৪র্থ সূরত জায়েজ। তৃতীয় সূরতের ক্ষেত্রে বিবরণ হল, যদি অনোন্যাপায় অবস্থায় হয়, তাহলে শুকর ছাড়া অন্য কোন হারাম প্রাণীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে পারে।

শুকর নিষিদ্ধ কারণ, এটি পুরোটাই নাপাক। তাছাড়া এর বিকল্প প্রাণী পাওয়া যায়। তাই শুকরের অঙ্গ প্রতিস্থাপন জায়েজ হবে না।

৫ম পদ্ধতির মাঝে মতভেদ আছে। উপমহাদেশের অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম এটাকে নাজায়েজ বলে থাকেন। তবে ভারতের কতিপয় উলামা এবং আরবের উলামাগণ কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে এ সূরতটিকেও জায়েজ বলে থাকেন।

মানুষের জীবন রক্ষার্থে কতিপয় উলামাগণের নিকট কতিপয় শর্তের সাথে এ পদ্ধতি জায়েজ হবার সুযোগ রয়েছে।

কিন্তু এরপরও অঙ্গ ক্রয় বিক্রয় থেকে বেঁচে থাকা জরুরী। কারণ, মানুষের অঙ্গ ক্রয় বিক্রয় করা বৈধ নয়।

যদি কতিপয় উলামাগণের বক্তব্য অনুপাতে জায়েজ হিসেবে আমলও করেন, তবু এর উপর তওবা ইস্তিগফার করা, সদকা খয়রাত করা আবশ্যক।

যেসব শর্তে ৫ম সূরতে ট্রান্সপ্লান্ট জায়েজঃ ১. যথাসাধ্য চেষ্টা করবে,যেন মুসলমানের অঙ্গ মুসলমানদের শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়।

২. কোন মানুষের এমন অঙ্গ কর্তন করা যাবে না যার উপর উক্ত ব্যক্তির প্রাণ নির্ভরশীল হয়। যেমন হার্ট ইত্যাদি।
৩. কোন মানুষের এমন অঙ্গ আলাদা করা জায়েজ নয়, যার দ্বারা ব্যক্তি মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। যেমন চোখ ইত্যাদি স্থানান্তর করা।

৪. অভিজ্ঞ এবং নির্ভরযোগ্য ডাক্তার একথা বলেন যে, এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই।
৫. যার অঙ্গ আলাদা করা হচ্ছে, তার অনুমতি থাকা বা মৃত্যুপথযাত্রী হলে তার ওয়ারিসদের পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন থাকতে হবে।

৬.জীবিত ব্যক্তির শরীর থেকে এমন অঙ্গই কেবল নেয়া যাবে, যার ব্যাপারে ডাক্তারগণ বলেন যে, এর কোন বিশেষ প্রয়োজন উক্ত ব্যক্তির নেই।
৭. অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্ট করার দ্বারা শরীরে কোন বিকৃত পরিবর্তন হতে পারবে না। যা অঙ্গ বিকৃতি ঘটায়।

৮. কোন মুসলমানের অঙ্গ কোন কাফেরকে কিছুতেই দেয়া যাবে না।
৯. যদি কোন মৃত লাওয়ারিস হয়, তাহলে তার অঙ্গ কিছুতেই ট্রান্সপ্লান্ট করা যাবে না।

১০, যার জন্য অঙ্গটি ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে, তার ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে, এর দ্বারা লোকটি সুস্থ্য হয়ে যাবে। (ফাতাওয়া উসমানী-৪/২২৩-২২৬)

তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা বাকারা-১৭৩)

আব্দুর রাহমান ইবনু তারাফাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। ‘কুলাব’ যুদ্ধের দিন তার দাদা আর-ফাজাহ ইবনু আস’আদের নাক কেটে গেলে তিনি রূপার নাক বানিয়ে নিলেন।

তা দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশে তিনি স্বর্ণের নাক তৈরী করে নেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৪২৩২, সুনানে নাসায়ি-৫১৬১, মুসনাদে আহমাদ-১৯০০৬)

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ