রকিব মুহাম্মদ : সারাদেশে কওমি মাদরাসাগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একজন কওমি মাদরাসার ছাত্রের জন্য এ সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত প্রতি বছর শাওয়ালের ৭ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত রাজধানীর নামীদামী মাদরাসাগুলোতে ভর্তি শুরু হয়ে যায়। এই লেখায় থাকছে ভর্তি পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ যা তাদের এই দুর্গম পথ পাড়ি দিতে অনেকটা সহায়তা করবে।
১. ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি
ভালো মানের মাদরাসাগুলোতে কোটা সাপেক্ষ ভর্তি নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। সুতরাং ভালো মাদরাসায় ভর্তি হতে আপনাকে মেধার পরিচয় দিতে হবে। পূর্বের শ্রেণী বা জামাতের কিতাবগুলো ভালোভাবে পড়ে আসতে হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে। সাথেসাথে, ভর্তির জন্য কাঙ্কিত মাদরাসায় নির্ধারিত ক্লাশ/বিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য কোন কোন কিতাব/বিষয়ের উপর পরীক্ষা হবে তা আগেই জানার চেষ্টা করুন।
২. মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ
সাধারণত প্রতি বছর শাওয়ালের ৭ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত রাজধানীর নামীদামী মাদরাসাগুলোতে ভর্তি শুরু হয়ে যায়। কোথাও একদিনেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়ে যায়, আবার কোথাও কয়েকদিন ধরে ভর্তি নেওয়া হয়। কোথাও আবার নতুন ছাত্রদের ভর্তি কার্যক্রম কোটা পূরণ সাপেক্ষে ভর্তি নেওয়া হয়। ভর্তির নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় বিপদে পড়তে হয় অনেককে। সুতরাং, আপনি যে মাদরাসায় ভর্তি হতে চান, সেই মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভর্তির তারিখ ও সময় সম্পর্কে জেনে নিন।
৩. শারীরিক পরিপাটি জরুরি
ভর্তি পরীক্ষায় নিরিক্ষনের জন্য আপনাকে অবশ্যই শারীরিক পরিপাটির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। চুল ছোট (সামনে পিছনে সমান) করা, দাড়ি মুন্ডন, কাটা/ছাটা থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকা, হাত পায়ের নখ ছোট রাখা, টুপি-পোশাক পরিচ্ছেদ স্টাইলিশ না হওয়া বাঞ্চনীয়। এগুলো আগেই ঠিক ঠাক করে রাখুন।
৪. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন
প্রায় প্রতিটি মাদরাসায় এখন ভর্তির সময় জন্মনিবন্ধন সনদ/ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র ও ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগে। আবার পূর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র, বোর্ডভুক্ত জামাতগুলোর রেজাল্টশিট সঙ্গে রাখুন। অনেক মাদরাসায় ভর্তির সময় ভর্তিচ্ছুর লিগ্যাল অভিভাবকের প্রয়োজন হয়, সুতরাং আপনার কাঙ্খিত মাদরাসা থেকে এ বিষয়টা সম্পর্কেও জেনে নিন।
৫. শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি
পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সময় নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দেওয়া, পরীক্ষার পরে যাতে নিজেকে নিয়ে কোনো আফসোস না থাকে। এমন যেন মনে না হয়, হয়তো আরেকটু ভালোভাবে পড়লে চান্সটা পেয়ে যেতাম! তাই প্রস্তুতি নেয়ার জন্য যে কয়দিনই পাওয়া যায় না কেন, চেষ্টায় গাফিলতি না রাখা। অবশ্যই আল্আলাহর রহমতে ও আপনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় যথাসময়ে আপনি নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন।
আরএম/