মুফতি সুহাইল আবদুল কাইয়ূম
রোজার ফিদিয়া : যদি কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমান বার্ধক্য বা অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে অক্ষম হন ও পুনরায় সুস্থ হয়ে বা সক্ষমতা ফিরে পেয়ে রোজার কাজা করার মতো সম্ভাবনাও না থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তির প্রতিটি রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ সদকা দেয়া ওয়াজিব। যেমন, একজন গরীবকে পেট ভরে দু’বেলা খাওয়ানো অথবা সদকাতুল ফিতরের সমান।কমপক্ষে ১ কেজি ৬৩২.৯৬ গ্রাম গম বা তার মূল্য অথবা ৩ কেজি ২৬৫.৯২ গ্রাম জব, খেজুর, পনির ও কিসমিস বা তার মূল্য গরীবকে দান করা। এটাকেই ফিদিয়া বলে।
অতি বৃদ্ধ ও মারাত্মক রোগী, যাদের রোজা রাখার শক্তি নেই ও ভবিষ্যতে কাজা আদায়ে সামর্থ্যবান হওয়ার আশাও নেই। এই ধরণের লোকের জন্য রোজা না রেখে ফিদিয়া দেয়ার অনুমতি আছে। এক্ষেত্রে তারা প্রত্যেক রোজার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে পেট ভরে দু’বেলা খাওয়াবে অথবা এক ফিতরার সমান দান করবে। এরুপ বৃদ্ধ ও রোগী পুনরায় কখনও রোজা রাখার শক্তি ফিরে পেলে তার উপর কাজা আদায় করা ওয়াজিব হবে। আর পূর্বে যে ফিদিয়া দান করেছিল এর জন্য সে পৃথক সওয়াব পাবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/২০৭, রদ্দুল মুহতার : ৩/৪১০)।
একটি ফিদিয়া একাধিক মিসকীনকেও দেয়া যাবে : একটি ফিদিয়া একজন মিসকীনকে দেয়াই উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকে দেয়াও জায়েজ আছে। (রদ্দুল মুহতার : ৩/৪১০)।
ছোট বাচ্চা বা নাবালিগকে খাওয়ালে ফিদিয়া আদায় হবে না : ছোট বাচ্চা বা নাবালিগকে খাওয়ালে ফিদিয়া আদায় হবে না। তবে বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সের কাউকে ফিদিয়া দিলে তা আদায় হবে। (রদ্দুল মুহতার : ৫/১৪৩)।
রমজান আসার আগে ফিদিয়া আদায় করা : রমজানের রোজার ফিদিয়া রমজান আসার পূর্বে আদায় করা যাবে না। বরং রমজানের মধ্যে বা পরে আদায় করতে হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪৩৫-৩৬)।
যদি কোনো ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে না পারে। তারপর এ অসুস্থতার মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। এমতাবস্থায় সে রোজাগুলোর ফিদিয়া আদায় করা আবশ্যক নয়। তবে ওয়ারিসগণ স্বেচ্ছায় আদায় করে দিলে মৃত ব্যক্তি সওয়াব পাবে। আর যদি সুস্থ হয়ে কাজা আদায় করার সময় পায় তাহলে কাজা আদায় করতে হবে। কাজা আদায় না করলে মৃত্যুর সময় ফিদিয়া দেয়ার ওসিয়্ত করে যাওয়া আবশ্যক। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/২০৭,২০৮)।
লেখক, নায়েবে মুফতি, ইসলামিক ফিকাহ একাডেমী, ঢাকা
এমডব্লিউ/