মুফতি মোস্তফা ওয়াদুদ কাসেমী : ইসলামে অন্য ধর্মাবলম্বীদের সাহায্য সহযোগিতায় নিষেধ নেই। কিন্তু জাকাত মুসলমানদের হক। এটা কোনো অমুসলিমকে দিলে জাকাত আদায় হবেনা। তাকে পুনরায় আবার জাকাত দিতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে জাকাতের খাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। জাকাত প্রদানের খাত ৮টি। যথা: ১. ফকির ২. মিসকিন ৩. যাকাত আদায়কারী কর্মচারী ৪. নওমুসলিমদের সংরক্ষণ ৫. দাসত্ত্ব মোচন ৬. ঋণগ্রস্থ ৭. আল্লাহর পথে ব্যায় ৮. মুসাফির।
এটা হলো আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। এখানে অমুসলিমের কথা বর্ণনা নেই। তাই অমুসলিম গরীব হোক আর মিসকিন হোক তাকে জাকাতের টাকা দেয়া যাবে না। কেউ যদি এ জাতীয় অমুসলিমকে জাকাত দেয় কিংবা কোনো অমুসলিম গরীবের বিয়ে দেয় তাহলে তার জাকাত আদায় হবে না। (ফতওয়ায়ে শামী, জাকাত অধ্যায়)
তবে এখানে চতুর্থ নম্বর খাত এর আলোকে নতুন ইসলাম গ্রহণকারী নবমুসলিমদের জাকাত দেয়া যাবে। তারা অমুসলিম থাকাবস্থায় জাকাত দিলে তা আদায় হবে না। আর তাদের মন জয় করার জন্য তাদেরকে দান করা যেতে পারে। অর্থাৎ যদি তাকে দান করার ফলে সে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট হয় ও পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করার প্রবল ধারণা হয় তাহলে দানের ক্ষেত্রে সে অগ্রাধিকার পাবে। কিন্তু তাকে জাকাতের নিয়ত করে সম্পদ দেয়া যাবে না। দিলে আদায় হবে না।
যেমন, রাসূলুল্লাহ সা. সাফওয়ান ইবনে উমাইয়াকে হুনাইনের যুদ্ধে প্রাপ্ত গনীমতের মাল থেকে দান করেছিলেন। অথচ ঐ সময় সে কুফরি অবস্থায় ছিলো। মুসলিম হওয়ার পর সে নিজেই বর্ণনা করেছে। রাসূল সা. এর দান ও সুবিচার আমার অন্তরে সবচেয়ে বেশি তাঁর প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করেছে। যা ইসলাম গ্রহণে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছ। অথচ ইতিপূর্বে তাঁর সবচেয়ে বড় শত্রু আমিই ছিলাম। (মুসনাদে আহমদ, মুসলিম ও তিরমিজি শরীফ)।
আরেক হাদিসে হজরত আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত আছে, একবার আলী রা. ইয়ামিন থেকে মাটি মিশ্রিত কাঁচা সোনা রাসূলুল্লাহ সা. এর খিদমতে প্রেরণ করেন। আর তিনি তা শুধুমাত্র চারজন লোকের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। তারা হলেন-
১. হজরত আকরা ইবনে হাবিস রা. ২. উয়াইনা ইবনে বদর রা. ৩. আলকামা ইবনে আলাসা রা. ৪. যায়েদ আল খায়ের রা.। আর তখনো তারা অমুসলিম ছিলেন।
এরপর তিনি বলেন, 'তাদের মন জয় করার উদ্দেশে ও তাদের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করতে আমি এগুলো তাদের দান করেছি।'
যাতে তারা মুসলমান হয়ে যায় ও আশপাশের কাফের শত্রুদের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখে। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
এমডব্লিউ/