আওয়ার ইসলাম: পাবনার ঈশ্বরদীতে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে রাস্তা থেকে ধরে থানায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। গত ২৮ এপ্রিল রাত ১১টার সময় ঈশ্বরদী শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের নাম মোসাদ্দীকুর রহমান মনি (১৬)। আহত মনি শহরের আলবাগ এলাকার মন্ডল গলির কাজী মোস্তাফিজুর রহমান ফরহাদের ছেলে এবং ঈশ্বরদী ইসলামীয়া আলিম মাদরাসার ১০ শ্রেণির ছাত্র।
শনিবার (৪ মে) বিকালে ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ফরহাদ সাংবাদিকদের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মোসাদ্দীকুর রাজধানীর গাজিপুরে কালিয়াকৈরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।মনির শরীরে জখম ও ব্যথা রয়েছে। বুকের বাম পাশের পাজরের হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়াও পায়ের কবজিতে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার গাজিপুর কালিয়াকৈরের সেবা স্পেশালাইজড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোগীর নিঃশ্বাস বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২৮ রবিবার রাত ১১টার সময় পরিবারের সকলের সঙ্গে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে মশার কয়েল আনতে যায় মনি। এ সময় ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী, মনিকে ডেকে তার দেহ তল্লাশি করে এবং তার সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় মানসিক নির্যাতন করে।
এসআই বলে ‘এত রাতে বাহিরে কি, তুই ইয়াবা ব্যবসায়ী?’ তাৎক্ষণিক মনি প্রতিবাদ করায় তাকে চর-থাপ্পড় মারে। এ সময় সে আবারও প্রতিবাদ করলে এসআইয়ের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে থানায় নিয়ে যায় মনিকে।
পরে সকালে বাসায় ফোন করে বলে- ‘আপনার তো অনেক টাকা, ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এসে থানা থেকে ছেলেকে কাল সকালে নিয়ে যাবেন।’
তিনি জানান, সকালে তার এক আত্মীয় পাবনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজুকে নিয়ে ঈশ্বরদী থানায় যান। তখন এসআই মোহাম্মদ আলী, মনিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়।
এ দিকে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওই ছাত্রের পিতা।
এ ব্যপারে ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলীর নিকট কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, গভীর রাতে ওই ছেলেকে রাস্তায় পেয়ে থানায় রাখা হয়েছিল। টাকা কিংবা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, অল্প বয়সী ছেলেকে মারধর করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ছেলেটি যখন দাঁড়িয়ে ছিল, তার গায়ে হাত পায়ে কাদামাটি ছিল। সে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না। সম্ভবত সে মোটরসাইকেল নিয়ে আসার সময় কোথাও পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছিল। এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএম/