সুফিয়ান ফারাবি: ঘড়ির কাঁটা চারটা ছুঁইছুঁই। বিকেলের সূর্যটা তখন পশ্চিম আকাশে। ফাগুনের রোদ মিশে আছে বইমেলার প্রাঙ্গণজুড়ে। মেলার পাশেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ব।
যেন গোটা বাংলাদেশটা বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। স্তম্বের নিচে পানির লেক। লেকে মাছেদের লুটিপুটি খেলা। সেই মনোরম পরিবেশে শুক্রবার বিকালে একঝাঁক তারুণ্যের হাত ধরে মোড়ক উম্মোচন হলো জনপ্রিয় লেখক ও আলেম গণমাধ্যম কর্মী ওমর শাহ’র প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ ‘যে জীবন আসমানের’।
মোড়ক উন্মোচনে উপস্থিত অতিথিরা বলেন, ভাষার মাসে একুশে বইমেলায় ধর্মীয়গ্রন্থ ‘যে জীবন আসমানের’ প্রকাশ মুসলিম জাতি হিসেবে আমাদের গর্বিত করেছে। শুধু গল্প উপন্যাস মেলায় লেখার উপজীব্য না রেখে সকল শ্রেণির পাঠকদের চাহিদা পূরণে প্রকাশকদের এগিয়ে আসা উচিত। ওমর শাহ’র এ বইয়ের মাধ্যমে মেলায় শুদ্ধতার আন্দোলনের সূচনা হলো।
ইসলামকে সহজ ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরার মতো বই বাংলা ভাষায় অনেক কমই রচিত হয়েছে। সুশীল পাঠকদের জন্য বইটি বড় একটি উপহার। পড়প্রকাশকে এমন একটি বই লেখকের হাত দিয়ে পাঠকের সামনে তুলে আনার জন্য তাদের সাহসী উদ্যোগকে আমরা অভিনন্দন জানাই।
আলেম লেখক ও মুফতি আবু সাঈদ যোবায়ের বলেন, ওমর শাহ’র যেকোনো লেখাই আমাদের মনে প্রাণ সঞ্চার করে।
হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। শিরায় উপশিরায় কাঁপন ধরায়। এমন শক্তিমান লেখকের জন্য লেখার উপজীব্য ধর্ম তখন আমাদের বুকটা গর্বে ভরে যায়। শুদ্ধ ভাষায় ধর্মকে চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়ার সাহস পাই। নাস্তিকতার কলামকে ডিঙ্গিয়ে বিশ্বাসের পৃথিবী গড়ার প্রেরণা জাগে। আল্লাহ লেখকে তার দীনের জন্য আরও কবুল করে নিন।
অনুবাদক ও জনপ্রিয় লেখক আমিন আশরাফ বলেন, এদেশে বাংলা ভাষায় ইসলাম চর্চা অনেক আগ থেকে শুরু হলেও বিশুদ্ধ বাংলায় মানসম্মত কাজ খুব কম হয়েছে। বেশির ভাগ কাজ হয়েছে উর্দু থেকে অনূদিত হয়ে। নিরেট বাংলায় যতোটুকু হয়েছে তা গণায় ফেললে বলা যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কিছু কাজ। সময় বদলিয়েছে।
ইসলাম নিয়ে গণমাধ্যমে এখন অনেক লেখালেখি হয়, হচ্ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সাতপ্যাঁচে জড়িয়ে যারা ইসলামকে জানতে আগ্রহী নন, তাদের জন্য ওমর শাহ’র উপহার ‘যে জীবন আসমানের’। সব ধরনের জটিলতা এড়িয়ে ইসলামকে সরল সাবলীল ভাষার তিনি উপস্থাপন করেছেন। ‘যে জীবন আসমানে’র বইটিতে চল্লিশটির মতো বিষয় স্থান পেয়েছে। সবগুলো বিষয় আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। সংক্ষিপ্তভাবে ইসলামের এতো চমৎকার উপস্থাপন আমি কম লেখায় দেখেছি।
কবি ও ছড়াকার হাসান আল মাহমুদের এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের সিনিয়র রিপোর্টার মাসুদ মিয়া, আলেম লেখক মুফতি শহীদুল ইসলাম, ছড়াকার ও গল্পকার নকিব মাহমুদ, লেখক রেজা হাসান খান ও লেখকের বন্ধু, সতীর্থ, পাঠক ও ভক্তবৃন্দ। বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার বাংলার প্রকাশন ৪২৮ নাম্বার স্টলে।
-এটি