শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


সাপ্তাহিক ছুটিতে কাজ করানোয় ২১ মিলিয়ন ডলার জরিমানা!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সাপ্তাহিক ছুটিতেও অফিস? অনেকদিন ধরেই সাপ্তাহিক একদিনের ছুটিও পাচ্ছেন না? বসের চাপে মুখের উপর কিছু বলাও যাচ্ছে না! তাহলে আপনার হতাশা আর রাগ ঠিক কোন উপায়ে চালনা করতে পারেন তা শিখে নিতে পারেন মারি জ্যঁ পিয়েরির কাছ থেকে। প্রায় এক দশক ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামি পশের কনরাড হোটেলে পরিচারিকার কাজ করতেন তিনি।

হাইতিয়ান অভিবাসী মারি ২০০৬ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই হোটেলে কাজ করছিলেন। তার কেবল একটাই শর্ত ছিল; সাপ্তাহিক ছুটি কাটা যাবে না কিছুতেই। মারি হোটেলকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি রবিবার কিছুতেই কাজ করতে পারবেন না, কারণ তিনি সৈন্যদের ক্রাইস্ট চার্চের একজন মিশনারি।

৬০ বছরের মারি বলেন, ‘আমি ঈশ্বরকে ভালোবাসি, রবিবার কোনও কাজ আমি করবো না। কারণ রবিবার আমি ঈশ্বরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে ব্যস্ত থাকি।’

দীর্ঘদিন ধরেই হোটেল কর্তৃপক্ষ তার ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান করে রবিবার ছুটি দিয়ে এসেছিল। তবে ২০১৫ সালের অক্টোবরে রান্নাঘরের ম্যানেজার তাকে জানান, রবিবার তাকে কাজ করতেই হবে। বদলে অন্যদিন ছুটি নিতে পারেন তিনি। মারি তার ফাদারকে দিয়ে একটি চিঠি লিখিয়ে জমা দেন।

ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ্রামবারে ধর্মনিরপেক্ষ কাজ করতে হলে তা তার ধর্মীয় বিশ্বাসের লঙ্ঘন করা হবে। কিন্তু বরফ এতে গলে না। ম্যানেজার মেরিকে জানান, তার সহকর্মীদের রাজি করিয়ে যদি তার ছুটি রবিবারে নিতে পারেন, তাহলে কিছুটা সুরাহা হতে পারে। ২০১৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এই ব্যবস্থাতেই কাজ চলতে থাকে।

কিন্তু এরপরেই হঠাৎ ‘খারাপ কাজ, অমনোযোগ এবং অবহেলিত অনুপস্থিতি’র অভিযোগ তুলে রাতারাতি চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয় মেরি জ্যঁ পিয়েরকে।

এর প্রতিবাদে মেরি ‘কর্মসংস্থানে সম-সুযোগসুবিধা কমিশনে' একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানান যে, হোটেল তার ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। অবশেষে, পার্ক হোটেল এবং রিসর্টস অফ টাইসন্স, ভার্জিনিয়ার বিরুদ্ধে তিনি মামলা দায়ের করেন।

তিনি বলেন, হোটেলটি ১৯৬৪ সালের নাগরিক অধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে, যেখানে বলা হয়েছে জাতি, রঙ, ধর্ম, লিঙ্গ বা জাতীয় উৎসের ভিত্তিতে কোনও সংস্থা তার কর্মীর সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারে না।

মারি পিয়েরের অ্যাটর্নি, মার্ক ব্রুমার বলেন, ‘হোটেলটি মারি পিয়েরের ধর্মীয় বিশ্বাস মাথায় রেখে বিষয়টি যুক্তিসঙ্গতভাবে মিটমাট করতেই পারতো। পরিবর্তে তারা অনুপস্থিতির বিষয় তুলে তাকে অভিযুক্ত এবং বহিস্কার করে।

সোমবার একটি ফেডারেল জুরি সিদ্ধান্ত নেয় যে, পিয়েরকে ক্ষতিপূরণ হিসবে ২১ দশমিক ৫ মিলিয়ন রুপি দিতে হবে। এর মধ্যে, ৩৬ হাজার ডলার হলো তার মাইনে ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা, ৫০ হাজার ডলার হলো মানসিক কষ্ট এবং মানসিক যন্ত্রণার ক্ষতিপূরণ। অবশিষ্ট ২১ মিলিয়ন হলো শাস্তি।

হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ‘আমরা জুরির রায়ে খুব হতাশ ছিলাম এবং বিশ্বাস করি না যে, এই মামলা আইনের দ্বারা সমর্থিত! পিয়েরের ১০ বছরের হোটেলের সঙ্গে কাজে তার ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য একাধিক ছাড় দেওয়া হয়েছিল।’ সূত্র– এনডিটিভি।

কেপি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ