নাজনীন আক্তার হ্যাপী: বেশিদূর যেতে হবে না, আপনার আশেপাশেই এমন অনেক বোনকে পাবেন যারা তালাকপ্রাপ্তা। হয়তো কারো কোলে বাচ্চা বা সে একাই। আমরা নিজেদের প্রশ্ন করি, তাদের কি আমরা খুব সহজভাবে গ্রহণ করি? এ
কটা মানুষের নাম জানার আগে যদি সে তালাকপ্রাপ্তা হয়, সেই বিষয়টা আমরা আগ বাড়িয়ে দিতে খুব পছন্দ করি। বিষয়টা এমন, যেন তার এটাই প্রধান পরিচয়! আমরা বেশিরভাগ মানুষ এটা বলে, এটাই বুঝিয়ে থাকি যে, ঐ মেয়ের জামাই তাকে ছেড়ে দিয়েছে বা ঐ মেয়ে তার জামাইকে ডিভোর্স দিয়েছে, তারমানে ঐ মেয়ে খারাপ।
সামনাসামনি ভাল কথা বললেও পেছনে রসিয়ে রসিয়ে গীবত করা তো নৈতিক দায়িত্বের ভেতর পড়ে!
দুনিয়াতে এমন কোন মানুষ আছে, যে কিনা শখের বশে বা খুশিতে আলাদা হয়ে যায়, বা একটা সংসার ভেঙ্গে দেয়? উহু। একদম না। প্রত্যেকটা ডিভোর্সের গল্প থাকে তিক্ততায় ভরা। বিশেষ করে মেয়েরা দেয়ালে পিঠ না ঠেকলে শত আঘাতেও সংসার আগলে রাখতে চায়!
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, সেই মেয়েটাকেই আমাদের সমাজ দোষী বানায়। সবার তো কমন কথা থাকে যে, ‘ভাল মেয়ে হলে কি আর তালাক হতো?’ আসলে আমরা বলতে পারি। অনেক বলতে পারি, বলতে তো আর টাকা খরচ হয়না।
কিন্তু যে পর্যায়ে এসে ডিভোর্স হয়, সেই অবস্থা সম্পর্কে আপনি আমি কতটুকু জানি? আমরা কয়জন প্রতিবেশির খোঁজখবর রাখি? আমি আপনি কি তার সংসারে থেকে নিজের চোখে দেখে এসেছি? কিভাবে আমরা অজানা বিষয়ে অপবাদ দেই? অপমান করি? গীবত করি? কুধারণা করি?
একটা মেয়েকে আমরা অসহায় ভাবি খুব। কারণ কি জানেন? তারা হয় কোমল। প্রতিটি মেয়ের ভেতর একজন মা লুকিয়ে থাকে, হোক সে সন্তানহীন, তবুও। মেয়েরা ছেলেদের মতো তেজি হয় না। এটা তাদের স্বভাব, তাদের স্বভাব শুধু সবাইকে আপন করে নেয়া, কেয়ার করা, উজাড় করে ভালবাসা। এই স্বভাবগুলোর কারণে দূর্বল মনে করি আমরা।
আসলে মেয়েদের আল্লাহ অনেক সম্মান দিয়েছেন। একজন মেয়ে পারে তার সন্তানকে যোগ্য শাসক বানাতে, একজন মেয়ে পারে তার সন্তানকে বীরে পরিণত করতে। একটি মেয়ে পারে তার ভালবাসা দিয়ে স্বামীকে ভাল করতে, একটি মেয়ে পারে তার বাবাকে নেশা থেকে ফিরিয়ে আনতে।
একটি মেয়েই পারে একটি পুরুষের জন্ম দিতে। মেয়েরা অসহায়? তারা সম্মানিতা।
এইচএএম