শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ওয়েব স্কুলি: একজন আলেমের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু সাঈদ যোবায়ের >

ওয়েব স্কুলি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট তৈরির একটি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার। একজন গ্রাহক শুধু নিজ প্রতিষ্ঠানের কিছু নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে খুব সহজেই নিজে নিজে একটি ওয়েব সাইট তৈরি করতে পারেন।

মাত্র মাসখানেক সময়ের ব্যবধানে পাঁচশতাধিক প্রতিষ্ঠান এর সাথে যুক্ত হয়েছে। ওয়েব স্কুলির মূল উদ্যোক্তা মাওলানা ইজহারুল ইসলাম। তিনি জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া থেকে ২০১৩ সালে দাওরায়ে হাদীস সমাপন করেছেন।

নানা পথ মাড়িয়ে আজ তিনি একজন সফল প্রোগ্রামার। একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প তিনি বলেছেন। তিনি দাওরায়ে হাদীস পড়ার পাশাপাশি ঢাকা কলেজ থেকে এইচ এস সি শেষ করেছেন।

একজন প্রোগ্রামার হিসেবে কিভাবে ক্যারিয়ারের শুরুটা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমার প্রোগ্রামিং এর শুরুটা ছিল একটু মজার। ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর থেকে মেডিকেল ও কম্পিউটার প্রোগ্রামিং নিয়ে দো'টানার মধ্যে ছিলাম। অনেকের উৎসাহে মেডিকেলের জন্য চেষ্টা করলেও আমার পছন্দ ছিল প্রোগ্রামিং।

সরকারি মেডিকেলে চান্স না হওয়ায় একটু জিদের বশবর্তী হয়ে চীনে গিয়েছিলাম এম.বি.বি.এস করতে। কিছুদিন ক্লাস করার পর ডাক্তারিটা আর ভাল লাগছিল না। এরপরও প্রথম সেমিস্টারে ভালো করেছিলাম। প্রথম সেমিস্টার থেকেই আবার কোডিং শুরু করলাম।

অবসর সময় পেলেই টিউটরিয়াল দেখতাম। নিজে কোড করতাম। দ্বিতীয় সেমিস্টারে পুরোপুরি কোডিং এ ঝুকে পড়ি। ক্লাসের পড়ার প্রতি তেমন মনযোগ থাকত না। এসময় পাইথন/জ্যাংগো কিছুটা শেখা হয়। কয়েকটা প্রজেক্টও করি প্রাকটিস হিসেবে।

দ্বিতীয় সেমিস্টার শেষে সামারে লম্বা ছুটি ছিল। ছুটিতে দেশে এলাম বেড়াতে। দেশে এসে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই, আমার দ্বারা মেডিকেল হবে না। সফটওয়ার প্রোগ্রামিং এ আমি ভালো করতে পারব ইনশা আল্লাহ।

মেডিকেল ছেড়ে দেয়ার ডিসিশান নেয়ার পর দেশে চাকরি খুঁজতে শুরু করলাম। আল-হামদুলিল্লাহ, সে মাসেই আমার চাকরি হয়ে যায়। সফটওয়ার ডেভেলপার হিসেবে ফাইন্ডার জিপিএস ট্র্যাকিং এ জয়েন করি।

প্রোগ্রামিং এর শুরু থেকেই ইচ্ছা ছিল, নিজে কিছু বানাব। দু'বছর চাকরি করার পর মনে হল, এখন জব ছেড়ে দেয়া উচিৎ। চাকরি ছাড়ার দু'মাস আগে ওয়েব স্কুলির আইডিয়াটা মাথায় আসে। তখন ডিসিশান নিলাম, চাকরি ছেড়ে আরও একজন দু'জন ডেভেলপার সাথে নিয়ে ওয়েব স্কুলির জন্য কাজ করব। সে হিসেবে সেপ্টেম্বরে জব ছেড়ে দিয়ে ওয়েব স্কুলির জন্য কাজ শুরু করলাম। ”

শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে পারাকে তিনি নিজের জন্য সৌভাগ্যের কারণ মনে করেন। তিনি জানান, “ইন্টারনেটে অধিকাংশ তথ্য মানুষের উপকারে আসে না। তাই আমি চাই শিক্ষা খাত ইন্টারনেট ব্যবহার করে আরো প্রসারিত হোক। অজপাড়া গাঁয়ের একজন শিক্ষকও যেন তার ক্লাস বিশ্ববাসীর সামনে উন্মুক্ত করে দিতে পারেন, সেটিই আমাদের উদ্দেশ্য। গ্রামের একজন মাদরাসা শিক্ষকের ক্লাস থেকেও যেন বিশ্ব উপকৃত হতে পারে তাই আমাদের উদ্দেশ্য।”

কওমি পড়ুয়া তরুণেরাও এই অঙ্গনে এগিয়ে আসতে পারেন। আইটিতে কাজের বেশ তারতম্য আছে। এখানে অনেক কাজ আছে যেগুলোতে ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতা প্রয়োজন। আবার কিছু কাজ সাধারণরাও করতে পারে।

মেধা, রুচি ও সময়ের দিকে লক্ষ্য রেখে বিষয় নির্বাচন করে এগোতে হবে। আইটিতে দক্ষ কারও পরামর্শ নিয়ে শুরু করলে ভালো হবে। কওমি মাদরাসার ছাত্রদের মাঝে যে অধ্যবসায় ও উদ্যম দেখেছি, তারা চাইলে আইটিতে খুব ভাল করতে পারবে।  তাদের জন্য পর্যাপ্ত ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা গেলে তারা বেশ ভালো অবদান রাখতে পারবে।

একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার ১০ উপায়

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ