শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ১৯৪২
আদরের কিটি,
কাল সন্ধ্যেবেলায় আমি ওপরতলায় ফান ডানেদের ঘরে বেড়াতে গিয়েছিলাম। মাঝে মাঝে গল্প করতে আমি এরকম যাই। কখনও কখনও বেশ জমে। খানিকটা পােকা-মারা বিস্কুট (পােকা-মারা ওষুধে ভর্তি কাপড়ের আলমারিতে বিস্কুটের টিনটা রাখা হয়) আর লেমােনেড খাই।
পেটারের সম্বন্ধে আমাদের কথা হলো। আমি ওদের বললাম, পেটার কিভাবে আমার গালে টোকা মারে। ওরকম ও না করে এটা আমি চাই। কেননা ছেলেরা আমার গায়ে হাত দিলে বিচ্ছিরি লাগে।
বাপ-মাদের একটা বিশেষ ধরন আছে সেইভাবে ওঁরা জিজ্ঞেস করলেন পেটারকে আমি ভালাে লাগাতে পারি কিনা, কারণ পেটার নিশ্চয়ই আমাকে খুবই পছন্দ করে। আমি মনে মনে ভাবলাম, মরেছে! মুখে বললাম, 'আজ্ঞে, না।' ভাবাে একবার।
আমি জোর দিয়েই বললাম, পেটারকে আমার একটু হাতে-পায়ে জড়ানাে বলে মনে হয়—হয়ত সেটা ওর লাজুক স্বভাবের জন্যে—মেয়েদের সঙ্গে মেলামেশার অভাবের দরুন অনেক ছেলে যেরকমটা হয়ে থাকে।
স্বীকার করতেই হবে যে, ‘গুপ্তমহলের (পুরুষ বিভাগ) শরণঙ্কর সমিতির খুব মাথা আছে। মিস্টার ভ্যান ডীক হলেন ট্রাভিস কম্পানির প্রধান প্রতিনিধি ; বন্ধুত্ব থাকায় আমাদের কিছু জিনিস উনি আমাদের হয়ে চুপিসারে লুকিয়ে রেখেছেন ; মিস্টার ডী যাতে আমাদের খবরটা পেয়ে যান তার জন্যে ওঁরা কী করেছেন বলছি।
আমাদের ফার্মের সঙ্গে কারবার করে দক্ষিণ জীল্যান্ডের এমন একজন কেমিস্টকে ওঁরা টাইপ করে এমনভাবে একটা চিঠি দিয়েছেন যাতে সে ব্যক্তিকে উত্তর পাঠাতে হবে বন্ধ করা একটি ঠিকানাযুক্ত খামে। বাপি খামের ওপর আপিসের ঠিকানা দিয়েছেন।
জীল্যান্ড থেকে ঐ খাম যখন আসবে, ভেতরের চিঠিটা সরিয়ে ফেলে তার ভেতর বেঁচে থাকার প্রমাণ হিসেবে বাপির স্বহস্তে লেখা একটি চিরকুট ভরে দেয়া হবে। এভাবে হলে, ভ্যা ডী চিরকুট পড়ে কোনাে কিছু সন্দেহ করবেন না।
ওঁরা বিশেষভাবে জীল্যান্ড বেছে নিয়েছিলেন এই জন্যেই যে, জায়গাটা বেলজিয়ামের খুব কাছে ; সীমান্ত পেরিয়ে সহজেই চিঠিটা গােপনে চালান করা যেতে পারে; তার ওপর, বিশেষ ধরনের পারমিট ছাড়া কাউকেই জীল্যান্ডে ঢুকতে দেয়া হয় না ; সুতরাং ওরা যদি ভেবেও নেয় যে, আমরা সেখানে আছি-উনি চেষ্টাচরিত্র করে কখনই সেখানে আমাদের খুঁজতে চলে যাবেন না।
তােমার আনা
-আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি থেকে
নবীজিকে লেখা হযরত হাসসান বিন সাবেত রা. এর কবিতা