শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


খাশোগি ইস্যু; সৌদির বিরুদ্ধে কী করতে পারেন এরদোগান?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুজাহিদুল ইসলাম
আওয়ার ইসলাম

বেশ কিছুদিন হতে আঞ্চলিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী এরদোগান ও এমবিসি নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজের মধ্যে সম্পর্ক বেশ শীতল। অধিকন্তু সম্প্রতি সৌদি নাগরিক ও প্রভাবশালী সাংবাদিক জামাল খাশোগি রহস্যজনক অন্তর্ধান দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে বেশ ঝাঁকুনি দিয়েছে।

জামাল খাশোগি ইতোপূর্বে সৌদিপ্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। রাজপরিবারে বেশ ঘনিষ্ঠও ছিলেন। কিন্তু মুহাম্মাদ বিন সালমান যুবরাজ হওয়ার পর তার বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মকান্ডের সমালোচনা করে ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকার লেখালেখি করে আসছিলেন।

এরদোয়ান : দ্য চেঞ্জ মেকার

সাধারণত আরব বিশ্বের স্বাধীনচেতা ব্যক্তিরা তুরস্ককে তাদের নিরাপদ স্থান হিসেব মনে করেন। এখানে নিজ দেশের দূতাবাসে গিয়ে সৌদি নাগরিকের আর ফিরে না আসাটা তুরস্ক কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

তুরস্ক দাবি করছে, খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হযেছে। কারণ তুরস্ক বলেছে, কেউ যদি মনে করে তুরস্ক এখন সত্তরের দশকের দেশ, তবে ভুল করবে।

তাই তার দেশ ও জনগণের ইজ্জত রক্ষার জন্য তুরস্ক ইতোমধ্যে গলার আওয়াজ বেশ উঁচু করেছে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তার দেশ ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলবে, তবে এটা স্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয় বলেও তিনি সতর্ক করেন’।

অনন্ত তুরস্ক এমন ব্যবস্থা নিবে যাতে আগামীতে এমন আর কোনো ঘটনা না ঘটে।

তুরস্ক ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কড়া অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দিকে সৌদি কর্মকর্তারা তেল সরবরাহ বন্ধ ও সৌদিতে রুশ ঘাটি স্থাপনের মতো হুমকি দিয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি আমেরিকায় সৌদিআরবের রাষ্ট্রদূত গলার স্বর নামিয়ে সবার উদ্বেগকে স্বাগত জানিয়ে অপেক্ষা করার আহবান জানিয়েছেন।

তবে শুরু থেকেই যা লক্ষণীয় হলো, তুরস্ক বিশেষভাবে সৌদির ব্যাপারে একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে।

সৌদির ভিন্নমতাবম্বী মুহাম্মাদ মিসআরি বলেন, পূর্বের অভিজ্ঞতা বলে, আংকারা সৌদির সাথে উত্তেজনা বাড়াতে চায় না; ২০১৬ সালের সেনাঅভ্যূথান, ফাতহুল্লাহ গুলেনের সংগঠনকে সহযোগিতা করা এবং তুর্কি লিরা দরপতনের পেছনে সৌদির হাত থাকা সত্ত্বেও তুরস্ক উত্তেজনা পরিহার করেছে।

তবে কঠোর হলে এরদোগান কী ব্যবস্থা নিতে পারেন? বিষয়টি বারবার আসছে আলোচনা।

তুরস্ক হয়তো সৌদিবিরোধী ইরানি জোটে শামিল হয়ে ইয়েমেনে সৌদিকে কোণঠাসা করবে। হয়তো বা হুথিদের কৌশলগত সহযোগিতা করার চিন্তা করবে।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে ইউরোপের মিত্রদের নিয়ে সৌদির অনুকূলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে কূটনৈতিকভাবে অগ্রসর হতে না দেয়া।

চালু হয়েছে কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন

বিপরীতে এটাও হতে পারে, এ সুযোগে সৌদির কাছ থেকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করা, কারণ দেশের অর্থনৈতিক বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য ৭০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।

ঘটনার শুরু হতেই উভয় পক্ষই সতর্কভাবে বিবৃতি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে সৌদি বাদশাহ সালমানের উপদেষ্টা মক্কার আমির তুরস্ক পৌঁছে এরদোগানের সাথে সাক্ষাত করেছেন।

এদিকে ঘটনায় উত্তেজনা কমাতে বাদশাহ সালমান এরদোগানকে ফোন করে বলেছেন, আমাদের সম্পর্ককে কেও নষ্ট করতে পারবে না।

বিপরীতে এরদোগান বলেন, তিনি উভয় দেশের সম্পর্ককে মজবুত ও আরো উন্নত করতে আগ্রহী।

এই ফোনলাপের পরেই সৌদি গোয়েন্দা প্রধান তুরস্কে এসেছেন এবং তদন্তে এক ধরনের গতি আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে সময়ই বলে দেবে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অপটু মুহাম্মাদ বিন সালমানকে পোড় খাওয়া এরদোগান কী ধরনের জবাব দেয়!

আরও পড়ুন: হাতের ঘড়িতে প্রমাণ খাশোগি হত্যার! (ভিডিও)

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ