শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জুমার খুতবার আগে ব্রেন স্ট্রোক, রাতে ইন্তেকাল তরুণ ইমামের জামিয়া গহরপুরের ফুজালা ও প্রাক্তনদের আয়োজনে ‘মাহফিলে নূর’ সম্প্রীতির বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে: ছাত্র জমিয়ত চিন্ময়ের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের উলম্ব অভিযান: রিজভী মতিঝিল থানা হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন এডভোকেট হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে চাঁদপুর পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ‘সংবিধানে কুরআন-সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক কোন কিছু রাখা যাবে না’ চাঁদপুর জেলা সিরাত সম্মেলন আগামীকাল, থাকছেন হেফাজত আমীর চট্টগ্রামে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের বিক্ষোভ-সমাবেশে জনস্রোত মৌলভীবাজারে আইনজীবী হত্যা ও ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফিতে ধর্মীয় প্রশান্তি অনুভব করি: আফসানা মিমি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আরবি ক্যালিগ্রাফির নান্দনিক শিল্পের সাথে বাংলাদেশের মুসলমানদের সখ্যতা অনেক পুরনো হলেও মাঝখানে তা স্থবির হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ইদানীং এই শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত মানুষের সংখ্যা আশা জাগানিয়া।

অক্ষর বা হরফ সাজানোর এই প্রতিযোগিতায় ছেলেদের পাশাপাশি কাজ করছেন বাংলাদেশী মেয়েরাও। তেমনি একজন উদীয়মান মেয়ে ক্যালিগ্রাফি শিল্পী আফসানা মিমি

পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি কাজ করছেন ক্যালিগ্রাফি আর ল্যান্ডস্কেপ নিয়ে। অল্প ক'দিনেই তার কাজ বিভিন্ন মহলে প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়েছে।

সম্প্রতি আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে এ ক্যালিগ্রাফি শিল্পীর সাক্ষাতকার নিয়েছেন সাজিদুল ইসলাম সাজিদ এবং আমিনুল ইসলাম হুসাইনী

আওয়ার ইসলাম: আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?

আফসানা মিমি : ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ। ভালো।

আওয়ার ইসলাম : শুরুতেই শুরুটা জানতে চাইবো। মানে ক্যালিগ্রাফির শুরুটা কবে থেকে শুরু করেছেন?

আফসানা মিমি : শুরুটা আসলে ২০১৫ এর মাঝামাঝি (মে/জুন হবে হয়তো) সময় থেকেই। তখন থেকেই আমার ক্যালিগ্রাফির যাত্রা শুরু হয়।

আওয়ার ইসলাম : ক্যালিগ্রাফি শিল্পে প্রবেশ কি নিজের শখ না কি বাবা মায়ের ইচ্ছে পূরণ?

আফসানা মিমি : না না। অাসলে তেমন কিছু না। বলতে গেলে হঠাৎ করেই এই জগতে প্রবেশ করা আরকি।

আওয়ার ইসলাম : তা সেই হঠাৎ করে প্রবেশের ঘটনাটা কী ছিল?

আফসানা মিমি: ২০১৫ তে আমাদের ডিপার্টমেন্ট (ইসলামিক স্টাডিজ) সাজানোর জন্য বড় ভাইয়ারা আমাকে আর এক ফ্রেন্ডকে ক্যালিগ্রাফি করতে বলেছিলেন। তখন থেকেই ক্যালিগ্রাফির প্রতি আগ্রহ জন্মাল।

এরপর যখন ‘মাহবুব মুর্শিদ স্যার’ এর ক্যালিগ্রাফি দেখি, তখন আগ্রহটা অনেক বেড়ে যায়। স্যার তার ক্যালিগ্রাফি কপি করার অনুমতি দিলেন। ক্যালিগ্রাফিতে প্রবেশের মূল ঘটনা এটাই।

আওয়ার ইসলাম : জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন?

আফসানা মিমি: হ্যাঁ। ন্যাশনাল এর পাশাপাশি ‘তুর্কী বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী’ নামের আন্তর্জাতিক একটি প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণ করা হয়েছে।

ইনশাল্লাহ সামনে আরো প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণ করার ইচ্ছে আছে।

আওয়ার ইসলাম : জানতে চাইবো, আরবি ক্যালিগ্রাফিই কেন বেছে নিলেন?

আফসানা মিমি: অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফি করতে আমার বেশি ভালো লাগে। আর এরাবিক ক্যালিগ্রাফির ফন্টগুলোর মধ্যে দিওয়ানি জালি ফন্টটা আমার খুব ভালো লাগে । তাছাড়া অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফিতে ধর্মীয় প্রশান্তি অনুভূত হয়।

আওয়ার ইসলাম : যতদূর জানি অনেকেই স্বপ্ন পূরণে নানান বাধার সম্মুখীন হয়ে ছিটকে পড়েন আবার কেউ সেসব বাধা ডিঙিয়ে সাফল্য ছিনিয়ে আনেন। তো কখনও কি এমন কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন?

আফসানা মিমি : আলহামদুলিল্লাহ আমাকে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। বরং সবার (টিচার্স, ফ্যামিলি পার্সনস সবাই) অনেক উৎসাহ পেয়েছি বলেই এতদূর আসতে পেরেছি।

আওয়ার ইসলাম: অাপনার কথায় বুঝা যাচ্ছে আপনার পরিবারও আপনার এই সাফল্যের ভাগিদার। তো এবার একটু পারিবারিকভাবেই পরিচিত হই। কী বলেন?

আফসানা মিমি : হ্যাঁ হ্যাঁ। কেন নয়?

আওয়ার ইসলাম : ক্ষণ জন্মা এই মনীষার জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানাটা জানতে চাই।

আফসানা মিমি: হাসালেন (মৃদু হেসে)। ক্ষণ জন্মা মনীষা! জন্মস্থান মাদারিপুর। তবে দাদাবাড়ি বা স্থায়ী ঠিকানা টঙ্গী গাজীপুরে।

আওয়ার ইসলাম : একজন আরবি ক্যালিগ্রাফার হিসেবে আপনার কাছে থেকে আরবি ক্যালিগ্রাফির উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে জানতে চাইবো।

আফসানা মিমি: আরবি ক্যালিগ্রাফির নান্দনিকতা ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছিল তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও ধারণা করা হয় ইসলামপূর্ব সময়ে মক্কা নগরীতে এর প্রথম প্রচলন করেন বিশর ইবনে আবদুল মালিক আল কিন্দি।

সপ্তম শতাব্দীর প্রথম থেকেই আরবি ক্যালিগ্রাফি শিল্পিত হয়ে উঠতে থাকে। আরব উপদ্বীপে ইসলাম প্রসারের সাথে সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্ব পায় এই শিল্প।

পবিত্র কুরআন আরবিতে অবতীর্ণ হওয়ায় আরব-অনারব মুসলমানদের কাছে ইসলামের ভাষা হিসেবে আরবি ক্যালিগ্রাফি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

আওয়ার ইসলাম : আপনি কি শুধু ক্যালিগ্রাফি নিয়েই কাজ করতে চান? নাকি অন্য কিছুও করার ইচ্ছে আছে?

আফসানা মিমি : আপাতত ক্যালিগ্রাফি আর ল্যান্ডস্কেপ এ দুটি নিয়েই কাজ করার ইচ্ছে।

আওয়ার ইসলাম : অল্প সময়ে ক্যালিগ্রাফি শিল্পী হিসেবে এই যে এতো পরিচিতি, কখনো কি ভেবেছিলেন এমনটা হবে?

আফসানা মিমি: না কখনো ভাবি নি আমার ক্যালিগ্রাফি মানুষ এত পছন্দ করবে। সবই আল্লাহর অনুগ্রহ।

আওয়ার ইসলাম : ক্যালিগ্রাফিতে আইডল হিসেবে কাকে অনুসরণ করেন?

আফসানা মিমি : মাহবুব মুর্শিদ স্যারই হচ্ছেন আমার আইডল।

আওয়ার ইসলাম : বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনি কী স্বপ্ন দেখেন?

আফসানা মিমি : আমি স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশ একদিন ক্যালিগ্রাফি জন্য অনেক বিখ্যাত হবে এবং বাংলাদেশে অনেক অনেক ক্যালিগ্রাফি শিল্পীর সৃষ্টি হবে। যাদের হাত ধরে বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি শিল্পে অনেকদূর এগিয়ে যাবে।

আওয়ার ইসলাম : যারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী তাদের সম্পর্কে আপনার কোন উপদেশ?

আফসানা মিমি: অবশ্যই প্রতিটি কাজের জন্য ইচ্ছেটা হচ্ছে মূল। সাথে কাজের প্রতি ভালোবাসাটাও রাখতে হবে। তবেই সাফল্য আসবে ইনশাল্লাহ ।

আওয়ার ইসলাম : সময় দেয়ার জন্য আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আগামী দিনের জন্য শুভ কামনা।

আফসানা মিমি : আপনাদেরও অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আফসানা মিমির কয়েকটি কাজ দেখতে এখানে ক্লিক করুন

৫ ডিমে লিখলেন পুরো কুরআন

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ