আওয়ার ইসলাম: হেফাজতে ইসলাম মহাসচিব আল্লামা জোনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, নিজেদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি করবেন না। যে সমস্ত বিষয় দ্বারা নিজেদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়, সে সমস্ত বিষয় বর্জন করতে হবে। তিনি হেফাজত ইসলামে চলমান অস্থিরতা বন্ধ ও সমস্যা সমাধানের প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।
সোমবার (৮ অক্টোবর) জামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর মাদরাসায় ‘ফটিকছড়ি ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি’র উদ্যোগে আয়োজিত সংগঠনের উপদেষ্টা কমিটি ও কার্যকরী কমিটির যৌথ আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাবুনগরী বলেন, ‘কিছু হলেই আমরা সমালোচনা শুরু করি। যার মাধ্যমে আমাদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। কিভাবে সমস্যার সমাধান হবে সেই চেষ্টা করুন। কোনো জায়গায় ব্যাথা করলে সেখানে ওষুধ দিতে হয়। অন্যথা সমস্যার সমাধান হয় না।’
কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন
তিনি বলেন, ‘আমাদের সকল কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর দীনকে বাস্তবায়ন করা। আল্লাহর দীনকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো বাতিলের সাথে আপোষ হবে না। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. বলেছেন, আমি জীবিত থাকবো আর দ্বীনের ক্ষতি হবে? অর্থাৎ, আমি জীবিত থাকা অবস্থায় কখনো দীনের ক্ষতি হতে দিবো না। আমরা সে ভূমিকা অবলম্বন করবো।’
নীতি-আদর্শের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর কুরআন ও রাসুলের সুন্নাহ মোতাবেক চলবো। এ অনুযায়ী আমাদের জীবনকে পরিচালিত করবো। সাথেসাথে আমরা সাহাবায়ে কেরাম ও আকাবিরদেরকেও অনুসরণ করবো।
আমাদের সকল কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়ন করা। আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো বাতিলের সাথে আপোষ হবে না। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেছেন, আমি জীবিত থাকবো আর দ্বীনের ক্ষতি হবে? তা হতে দেব না।
হযরত উসমান রাদিআল্লাহু আনহুর ঘটনা সবাই জানেন। উসমান রা. কে যখন মক্কায় আটকে রাখা হয়েছিল তখন একটা গুজব ছড়িয়েছিল, উনি শহীদ হয়ে গেছেন। এমতাবস্থায় সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহকে বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! অন্যান্য কর্মসূচি পরে শহীদের রক্তের বদলা আগে।
সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য ছিল, আমরা হজ-উমরা পরে করবো, আমার ভাইয়ের খুনের বদলা আগে নিবো। এরকম ঘটনা আমাদেরও আছে। শাপলা চত্বরে আপনারা গিয়েছেন। আমিও গিয়েছি। এই শাপলা চত্বরের শহীদদের খুনের বদলা আগে নিবেন তারপর অন্যকিছু। এটা সাহাবায়ে কেরামের তরিকা, এটা সাহাবায়ে কেরামের সুন্নত।
তিনি বলেন, একজন কওমি আলেমকে মানুষ যতটা মোহাব্বাত করে, সম্মান করে একটা ভার্সিটির অধ্যাপক বা কলেজের প্রফেসরকে মানুষ এতটা ভক্তির চোখে দেখে না। সাবধান! এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আলেমদের থেকে মানুষের ভক্তি উঠে যায়।
আমাদের আকাবির কাসেম নানুতুবী আমাদের এই শিক্ষা দিয়ে গেছেন, যে দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠার সাথেসাথে উসূলে হাস্তেগানা (৮মূলনীতি) তৈরি করে গেছেন। ৮মূলনীতি আপনারা পড়বেন! তার ৭ নম্বর মূলনীতিতে বলা আছে কওমি মাদ্রাসায় সরকারের অংশীদারিত্ব বেশি ক্ষতিকর। এটা আপনাদের মনে রাখতে হবে।
মাওলানা সলীম উদ্দিন দৌলতপুরীর সঞ্চালনায় এ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা সালাহ্উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদি, মাওলানা জুনাইদ বিন জালাল, মুফতি কুতুবউদ্দিন, মাওলানা গোলাম রাব্বানী ইসলামাবাদী, মাওলানা নুরুল আলম নাসিরী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা আব্দুল মতিন,মাওলানা আযীযুর রহমান, কারী আবু সাঈদ প্রমুখ।
আরো পড়ুন-
আল্লামা শফিকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর পোস্ট; শালিসে ক্ষমা প্রার্থনা
‘ভুল থেকে সরে এলে আমরা পুনরায় মাওলানা সাদকে মানতে রাজি’
আরএম/