এম ওমর ফারুক আজাদ
আওয়ার ইসলাম
ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী দীর্ঘদিন দায়িত্বে রয়েছেন। মুফতি আমিনী রহ. আহুত প্রতিটি আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রবীণ এ আলেমে দীন সামনের কাতারে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছেন।
শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের উত্থান ও সক্রিয় আন্দোলনে প্রবীন রাজনীতিবিদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকে সিনিয়র নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে চট্রগ্রামের দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া বাবুনগরের পরিচালনা করে আসছেন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
সম্প্রতি আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ইসলামী ঐক্যজোট থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কিন্তু উল্লেখযোগ্য গণমাধ্যমে এ সম্পর্কিত কোন বিবৃতি প্রকাশ না পাওয়ায় জনমনে তার পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। সৃষ্টি হয় বিভ্রান্তি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমি মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছি তবে এখনো পদত্যাগপত্র জানা দেইনি।
আল্লামা মুহিব্বুলাহ বাবুনগরী বলেন, আমি মুফতি আমিনীর দল করতাম। আমি জানতে পেরেছি বর্তমানের ঐক্যজোট আমিনীর আদর্শ ভুলে সরকারি দলের সঙ্গে আঁতাত করছে। যদি এটা সত্য হয় তবেই আমি পদত্যাগ করবো। তবে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেইনি।
সোমবার (১অক্টোবর) দারুল উলূম হাটহাজারীর ছাত্র মিলনায়তনে বেফাকুল মাদারিসিল আরবিয়া বাংলাদেশ ও আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ২০১৮ সালের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মুমতাজ (জিপিএ ৫) প্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ এবং কওমি মাদরাসার ঐতিহ্য ও অবদান শীর্ষক আলোচনা সভায় দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত থাকলেও মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী অনুপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমাকে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে কিন্তু আমি যাইনি। কারণ, বেফাক দেওবন্দের চেতনা বিসর্জন দিয়ে স্বীকৃতি নিয়েছে।
সংসদে পাস হওয়া কওমি শিক্ষার স্বীকৃতি বিলে দেওবন্দের উসুলে হাসতেগানা মেনে নেয়া সত্ত্বেও কিভাবে আদর্শ বিসর্জন দিয়েছে প্রশ্ন করা হলে বাবুনগরী বলেন, দেওবন্দের উসুলে হাসতেগানায় সরকারের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক না রাখার কথা বলা আছে কিন্তু এখন বেফাক ও আল্লামা শফি সরকারের সাথে সুসম্পর্ক করছেন, তাদের প্রশংসা করছেন।
মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আমি এখন বেফাকের সাথে সম্পর্ক রাখছি না এবং আমীরও (আল্লামা আহমদ শফি) আমার সাথে যোগাযোগ করছেন না। এছাড়াও আমার প্রতিষ্ঠান (জামিয়া ইসলামিয়া বাবুনগর) বেফাক এর অধীনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন
হাটহাজারীর অনুষ্ঠানে কওমি স্বীকৃতি ইস্যুতে আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র বক্তব্য সম্পর্কে তার অভিমত জানতে চাইলে বলেন, ‘মুহতামিম সাহেব (আল্লামা আহমদ শফী) কথাটি কেন বলেছেন আমার বুঝে আসছে না। শাপলা চত্ত্বরে শহিদদের কথা ভুলে গিয়ে তিনি কিভাবে এমন কথা বলেন।’
উল্লেখ্য, হাটহাজারীতে বেফাকের ওই অনুষ্ঠানে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন আমি আওয়ামী লীগ হয়ে গেছি। তারা কমবখত (নির্বোধ), তারা মিথ্যা কথা বলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এমনি মহব্বত করে কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমি আওয়ামী লীগ হই নাই। সেটা আপনাদের ভুল।’
আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী আহমদ শফীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, তার সাথে কি হয়েছে আল্লাহ ভালো জানেন। অথচ সরকার ১৩ দফার এক দফাও মানেনি। তারপরেও তাদের সঙ্গে কিসের সুসম্পর্ক আমার বুঝে আসে না।’
তিনি বলেন, আজ না কাল মৃত্যু হয় জানি না। তাই সব ধরনের পার্টি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।
আরও পড়ুন
হেফাজত, কওমি স্বীকৃতি ও সংবর্ধনা বিষয়ে দীর্ঘ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকার ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখাতে চায় ইসলামী আন্দোলন
-আরআর