রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম
গত ১৯ জুলাই ইসরাইলের পার্লামেন্টে ইহুদি রাষ্ট্রের ঘোষণা দিয়ে একটি আইন পাস করা হয়। ওই আইনে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেমে থাকা ফিলিস্তিনিদের ভূমি অধিগ্রহণে অনুমতির পাশাপাশি আরবিকে ইসরাইলের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা বাতিল করা হয়। আগে হিব্রু এবং আরবি; দুটোই রাষ্ট্রের দাপ্তরিক ভাষা ছিল।
এই আইন অনুযায়ী, ইজরায়েলে থাকা অ-ইহুদি নাগরিকদের ‘দ্বিতীয় শ্রেণী’র মর্যাদায় রাখা হয়েছে। এছাড়াও ইজরায়েলী নাগরিকত্ব পাওয়া ফিলিস্তিনি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও থাকবেন এই কাতারে। আর সেকারণেই এই আইনটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ।
ফলে ইহুদি রাষ্ট্র আইন বাতিলের দাবিতে ইজরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে বিক্ষোভে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। ইতিহাসে নজিরবিহীনভাবে এই বিক্ষোভ র্যালিতে যৌথভাবে অংশ নেন ইহুদি এবং আরব সম্প্রদায়ের লোক।
শনিবার রাত থেকে শুরু হয় এই বিক্ষোভ র্যালি। দফায় দফায় এ বিক্ষোভ চলছে এবং ক্রমশই তা বড় আকার ধারণ করছে।
চলতি বিক্ষোভে ইহুদি নাগরিকেরা, যাদেরকে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদায় রাখা হয়েছে, তারাও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তাদের দাবি, সকল নাগরিকের মর্যাদা হবে সমান।
পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে বর্ণবাদী ও জাতিবিদ্ধেষী আখ্যা দিয়ে, তা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বিক্ষোভকারীরা।
রাজধানী তেল আবিবে জড়ো হয়ে তারা দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের একঘরে করতেই ইসরাইলকে ইহুদি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। বর্ণবাদী ও জাতিবিদ্বেষী এ আইন শিগগিরই প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে জানান তারা।
শনিবার রাতে মিছিলে অংশ নেওয়া এক বিক্ষোভকারী আল জাজিরাকে বলেন, “এটা খুবই চমৎকার। এই প্রথমবার আমি দেখছি যে, ইহুদি আর ফিলিস্তিনিরা কোন কিছুর দাবিতে একসাথে বিক্ষোভ করছে। যারা গণতন্ত্র এবং একতায় বিশ্বাস করে তাদের জন্য এটা খুবই ভালো লাগার এক মুহুর্ত”।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ‘এ আইনের সাথে আমরা একমত নই। নতুন আইন আরবি ভাষা, শান্তি, এবং আমাদের ভবিষ্যত বিরোধী। আমরাই এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা। আমরা এ আইন কখনো মানবো না। শুধু আরবদের জন্য নয় সব সংখ্যালঘুর জন্য বিপজ্জনক এ আইন।
তারা আরো বলেন, আরব ইসরাইলিদের জন্য অনেক বড় আঘাত এটি। সরকার সংখ্যালঘুদের একঘরে করার পরিকল্পনার হিসেবে এ আইন পাস করেছে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের মতো যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হতে পারে।’
১৯৪৮ সালে আরব যুদ্ধের পরে কয়েক লাখ মানুষকে জোরপূর্বক তাদের জন্মস্থান থেকে উচ্ছেদ করে ইসরাইল। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যান অনেকে। থেকে যাওয়া অনেকে চিহ্নিত হন ফিলিস্তিনি হিসেবে। জনসংখ্যায় তারা ৯০ লাখের মতো।
ইসরাইল তাদেরকে সমান অধিকার দেয়ার কথা বললেও অনেকেই অভিযোগ করেন, দেশটির সরকার তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক এবং দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করছে।
এমন অবস্থায়, ইসরাইলকে ইহুদি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না তারা। ইহুদি ইসরাইলিরা বলছেন, তাদের মতোই সুযোগ ভোগ করার অধিকার আছে সংখ্যালঘু নাগরিকদের।
ব্যবসার হিসাব নিয়ে জটিলতা আর নয় (কল- 01771 403 470) ক্লিক করুন
দেশে দেশে তারুণ্যের জাগরণ, পিছিয়ে পড়ছে কি কওমি তরুণরা?
আরএম