শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

দাম্পত্য কলহ এড়াতে মেনে চলুন ১০ নিয়ম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুমাইয়া মাহমুদা:  দাম্পত্য জীবনে স্বামী স্ত্রীর মাঝে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলতেই থাকে। সম্পর্ক এই ভালো তো এই খারাপ। এই ভালো খারাপের মধ্যে জীবন কখনো উপভোগ্য হয়ে ওঠে আবার বিরক্তিও চলে আসে। এই সম্পর্ক যতক্ষণ ভালো থাকে ততক্ষণ মনে হয় দুনিয়াটা বেহেশত। কিন্তু সম্পর্ক খারাপ গেলেই ঘর বাহির সব নরক হয়ে ওঠে। তাই সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য স্বামী স্ত্রী দুজনকেই কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।

কিছু বিরক্তিকর অভ্যাস আছে যার কারণে অনেকেরই দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। আর একবার সম্পর্ক নষ্ট হলে সেই সম্পর্ক পুনরায় আগের মত হয় না। সেইসব বিরক্তিকর অভ্যাসগুলোই আপনার সুন্দর সম্পর্কটিকে ভেঙে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। সুতরাং এই অভ্যাসগুলো পরিহার করার চেষ্টা করুন।

১. খারাপ ব্যবহার না করা
তাকে এমন কিছু নিয়ে ঠাট্টা করা যাতে সে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এমন ধমক দেয়া যা অন্যদের সামনে তার অসম্মান হয়ে যায়। তাকে অপমান করা আপনার প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধকে কমিয়ে দিবে। সুতরাং, স্বামী-স্ত্রী উভয়ই একজন আরেকজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং খারাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।

২. বাড়াবাড়ি না করা
আপনার স্বামী/স্ত্রী কি করছেন, কি খেলেন কিংবা কোথায় যাচ্ছেন তা জিজ্ঞেস করা অবশ্যই আপনার কর্তব্য। কিন্তু এই সামান্য কুশল বিনিময় বিরক্তির পর্যায়ে তখনই পরে যখন আপনি অযথাই তার ওপর খবরদারি করতে যান। এখানে যাবেন না, সেখানে কেন গেলেন, এর সাথে কথা বলবেন না, তার সাথে মিশবেন না এই ধরনের অতিরিক্ত অধিকার খাটিয়ে কথা বলা বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। বুঝতে হবে কোন আচরণটি আকর্ষণীয় এবং কোনটি বিরক্তিকর।

৩. পেছনের কথা না বলা
অনেকের নিজের বর্তমান ভালোবাসার মানুষটির সামনে কথায় কথায় পুরনো দিনের কথা বলে থাকেন। এই অভ্যাসটি আপনার বর্তমান সম্পর্কের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এতে করে আপনার ব্যাপারে ভাবনা আসতে পারে, আপনার মনে এখনো পুরনো দিনের বিষয়গুলো রয়ে গেছে। সুতরাং এই অভ্যাসটি দূর করুন।

৪. কথা শোনা
দাম্পত্য সম্পর্ক ঠিক রাখতে হলে স্বামী/স্ত্রী উভয়কে ভালো শ্রোতা হতে হয়। আপনি আপনার স্বামী/স্ত্রীর কথা শুনলেন না বা শুনতে চাইলেন না এতে করে তিনি ভাবতে পারেন আপনি তাকে এড়িয়ে চলছেন। এই ভাবনাটি সম্পর্কের জন্য ভালো নয়। একে অপরের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। এতে করে তিনি নিজেকে আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন। এবং সেই হিসেবে তিনিও আপনাকে গুরুত্ব দেবেন।

৫.সন্দেহ ও গীবত না করা
কখনো সন্দেহ করতে যাবেন না। সন্দেহ সম্পর্ককে ধ্বংস করে। আপনার জীবনসঙ্গী আপনার খুব কাছের মানুষ এটা সত্যি। কিন্তু খুঁতখুঁত করে যদি তার বিষয়ে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করেন, আপনি নিঃসন্দেহে হতাশ হবেন। মানুষ কখনো নিখুঁত নয়। আর মনে রাখবেন, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ হিসাব দিবে। তাই সন্দেহ দূর করুন। স্বামী বা স্ত্রী একে অপরের চাদরস্বরূপ, ছোট-খাটো ভুলত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা নিয়ে অন্যদের কাছে বলে বেড়াবেন না, গীবত করবেন না।

কুরআনুল কারীমে আল্লাহ বলেছেন, “হে মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।” [আল হুজুরাত, ৪৯ : ১২]

৬.তুলনা  না করা
আপনার ভালোবাসার মানুষটি যা করেন এবং আপনার জন্য যা করছেন তার তারিফ করা শিখুন। অন্য কারো সাথে তুলনা করে তার মানসিকতাকে আঘাত করবেন না। অমুকের স্বামী/স্ত্রী তার জন্য অনেক কিছু করেছে তুমি কেন করো না বা করতে পারো না এই ধরনের তুলনামূলক কথা কখনোই নিজের স্বামী/স্ত্রীর সামনে বলা উচিৎ নয়। অন্য একজনের সাথে তুলনা করা সব চাইতে বড় আঘাত আপনার ভালোবাসার মানুষটির জন্য। এই ধরনের অভাস ত্যাগ করুন।

৭. নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদাত  করা
যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদাত না করে, নামাজ না পড়ে এবং আল্লাহর নির্দেশিত পথে না চলে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট নন। নিয়মিত নামাজ না পড়া, অশ্লীল কাজ, হারাম উপার্জনগুলো থেকে সরে না আসার কারণে অনেক সংসার ভেঙ্গে গেছে। আল্লাহর প্রতি কর্তব্য পালনে অলসতা-উপেক্ষা করার কারণে মুসলিম সংসারে অত্যন্ত দ্রুত ভাঙ্গন ধরে যায়

৮. তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ না দেওয়া 
একটা কথা মনে রাখবেন, দাম্পত্যের ক্ষেত্রে তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে চোখ বুজে বিশ্বাস করবেন না। যতই হোক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী বা প্রিয় কাজিন, কারো কথাই চোখ বুঝে বিশ্বাস করবেন না ও কাউকে নিজেদের দাম্পত্যে কথা বলার সুযোগ দেবেন না।

৯.তুমি একটা কাপুরুষ
এ ধরনের কথাবার্তা সঙ্গীকে অনেক বেশি বিচলিত করে। এতে তার মধ্যে এক ধরনের হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। সে নিজেকে অন্যের কাছে অনেক ছোট ভাবে। এতে সংসারে অশান্তি বেড়েই যায়। কাজেই এ ধরনের কথা বলা থেকেও বিরত থাকুন।

১০.আমি ডিভোর্স চাই
একসঙ্গে পথ চলতে ঝগড়া হবেই। কাজেই এটি স্বাভাবিকভাবে নেওয়াই ভালো। অনেকেই আছেন যারা একটু ঝগড়াতেই ডিভোর্স চেয়ে বসে থাকেন। এ ধরনের মন্তব্য স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। তবে একবার যদি বলেই ফেলেন তাহলে আন্তরিকভাবেই ক্ষমা চান। আর প্রতিজ্ঞা করুন মুখে আর কখনও এ ধরনের কথা উচ্চারণ করবেন না। মনে রাখবেন, এ ধরনের কথাবার্তাই কিন্তু দুজনের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরির অন্যতম কারণ।

আরও পড়ুন : দাম্পত্য জীবন, অজ্ঞতা ও পরিণাম: মাওলানা আবু তাহের মেসবাহ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ