আবদুল্লাহ তামিম: ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ পর্দা নেমেছে ফ্রান্সের জয় দিয়ে। ফুটবলের পরবর্তি এ আসর ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হবে কাতারে। কিন্তু সৌদিসহ মধ্যপ্রচ্যের কয়েকটি দেশ কাতারের মাটিতে বিশ্বকাপ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।
কাতার সন্ত্রাসবাদের মদদ যোগাচ্ছে এমন অভিযোগে দেশটির উপর অবরোধ আরোপ করে সৌদি জোট। যেখানে মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন রয়েছে। এ কারণে সৌদিকে বাদ রেখে কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজন যেন তাদের গৌরবের পথে কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে ২০২২ বিশ্বকাপের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আনছে কাতার কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ এবং প্রচুর অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
কাতারের স্থানীয় মিডিয়া শঙ্কা প্রকাশ করছে, যেভাবে অবরোধ তৈরি করা হয়েছে কাতারের ওপর, তাতে করে দেশটিতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে ভয় তাদের।
কাতার যে বিষয়টা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে তা হলো, সৌদি আরবের সঙ্গে যে সীমান্ত রয়েছে কাতারের, সেটাই একমাত্র স্থল পথে যোগাযোগের মাধ্যম। তাদের নির্ভর করতে হয় সমূদ্র বন্দর ও আকাশ পথের ওপর।
কিন্তু সমূদ্রে ও আকাশ পথে অবরোধের কারণে তাদের গর্বের এয়ারলাইন্স কাতার এয়ারওয়েজ প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে।
এ ধারা যদি অব্যহত থাকে তো কীভাবে কাতারে বিশ্বকাপ হবে এটাই বড় দুশ্চিন্তার কারণ। কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনের সঙ্গে জড়িত উচ্চপর্যায়ের কমিটি এখনও এ বিষয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি বলে জানা গেছে।
মাদরাসার তাখাসসুস বিষয়ে আলেমদের কাছে কিছু কথা
তবে, স্থানীয়দের বক্তব্য অনুসারে জানা যাচ্ছে, ২০১০ সালে কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনের মেন্ডেট লাভ করার পর যে সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে, এবারের সঙ্কট তার চেয়েও অনেক বড় বলে মনে হচ্ছে।
আবার অন্য দিকে প্রচুর গরমের কারণে বিশ্বকাপকে শীতকালে নিয়ে আসা কিংবা আয়োজক হওয়ার লড়াইয়ে জেতার ক্ষেত্রে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে কাতারের বিরুদ্ধে, সবগুলোকে পেছনে ফেলে সফলভাবে আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আসছিল কাতার কতৃপক্ষ।কিন্তু হঠাৎ এই রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে শঙ্কার মধ্যে পড়ে গেছে বিশ্বকাপের আয়োজন।
ডেইলি স্টার এর মতে, বিশ্লেষকরা বলছেন, যে অনিশ্চয়তা সংকটের মধ্য দিয়ে এগুচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে কাতার বিশ্বকাপে সন্ত্রাসী হামলাও হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছে।
এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো তুঙ্গে উঠতে পারে অথবা সৌদি আরব আক্রমণ করতে পারে। এই বিষয়গুলো কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনকে বিপজ্জনক স্থানে নিয়ে যেতে পারেন বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।
মধ্যপ্রচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ হিসেবে সৌদি আরব ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তাদের বাদ দিয়ে বিশ্বকাপ মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশে কেনো হবে। সব মিলিয়ে কাতারের ২০২২ সালের বিশ্বকাপ হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সবকিছুর কল্পনা-জল্পনাকে পাশে রেখে কূটনৈতিক সংকটে পড়া কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন নিয়ে কোনো ঝামেলা হবে না বলে মনে করেন ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের দুটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, কাতারের বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট শুরু হতে আরো চার বছর বাকি। এই সময়ের মধ্যে কাতার ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছে ফিফা।
সূত্র: ডেইলি স্টার, রোজনামা, টাইমস অব ইন্ডিয়া
অারও পড়ুন –
ক্রাউন প্রিন্স সম্পর্কে মন্তব্য করায় গ্রেফতার আরেক সৌদি আলেম
ইসরায়েলি সেনাকে অভিশাপ দেয়া এক বৃদ্ধর ছবি ভাইরাল
দ্রুত বিয়ে করতে যে আমলটি করবেন
-আরআর