হামিম আরিফ: শাইখুল হাদিস অাল্লামা আজিজুল হক রহ. প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম দীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া (সাত মসজিদ, মুহাম্মদপুর, ঢাকা) বৃহদাকারে ফুযালা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ পর্যন্ত জামেয়া থেকে ফারেগ ২৫০০ আলেমকে একত্রিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামেয়াটি। সে লক্ষ্যে চলছে ফারেগিনদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনা।
স্বাধীনতার পর ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া ৷ সেই থেকে ২০১৮ পর্যন্ত শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. নামের সাথে একাকার হয়ে যাওয়া এক অনবদ্য নাম জামিয়া রাহমানিয়া ৷
১৮৫৭এর সিপাহী বিপ্লব বাহ্যত ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর জাতি ও মিল্লাতে ইসলামিয়ার শেষ দূর্গ হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছিল দারুল উলূম দেওবন্দ ৷ শায়খুল হিন্দের উত্তরসূরী শায়খুল হাদীসের হাতে গড়া জামিয়া রাহমানিয়াও দারুল উলূমের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের পথে চলেছে প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকেই ৷
তিন দশকের দৃপ্ত পথচলার পথে পথে স্থাপন করেছে অবিস্মরণীয় বহু মাইলফলক ৷ ইসলাম ও জাতির প্রয়োজনে বিভিন্ন ময়দানে ভূমিকা রাখার মত যোগ্য সন্তান গড়ে জামিয়া রাহমানিয়া আজ বাংলাদেশে এক অনন্য মাদারে ইলমী ৷ যার শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে আছে বাংলার প্রতিটি জনপদে ৷
শায়খুল হাদীসের রেখে যাওয়া এই ইলমী স্রোতধারাকে আরো শাণিত করার উদ্যোগ হিসেবে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফুজালা সম্মেলন।
জানা যায়, আগামী ১৭নভেম্বর'১৮ শনিবার জামিয়া রাহমানিয়ার ফারেগীন ও প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এ সম্মেলন ৷ এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি৷ যারা সম্মেলন সফল করতে খাটছেন দিন রাত।
ফুযালা সম্মেলন সম্পর্কে জানতে চাইলে জামিয়া রাহমানিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মামুনুল হক আওয়ার ইসলামকে বলেন, জামিয়া রাহমানিয়ার এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। এখান থেকে যারা ফারেগ হয়েছেন তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন মাদরাসা পরিচালনা করছেন, নানা প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্বে আছেন। তাদের সবাইকে এক করা এবং সবার থেকে অভিজ্ঞতা বিনিময়ই এ সম্মেলনের লক্ষ।
তাছাড়া সবার মধ্যে সম্প্রীতি, একে অপরের প্রতি সহযোগী মনোভাব এবং শিক্ষক ছাত্রের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্যও এ সম্মেলন।
তিনি জানান, এর আগে কয়েকবার ফুযালা সম্মেলন হলেও সবাইকে একত্রিত করা এবং বৃহদাকারে ফুযালা সম্মেলনের উদ্যোগ এবারই প্রথম। আর ২০১৯ সালে এর চেয়েও বড় আকারে অনুষ্ঠিত হবে দস্তারবন্দী। যেখানে এ পর্যন্ত সব ফারেগিন উপস্থিত হবেন এবং তাদের পাগড়ি দেয়া হবে।
মাওলানা মামুনুল হক আরও বলেন, ফারেগিন শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে নানা সমস্যার শিকার হয়ে থাকে, পারস্পরিক যোগাযোগ এ সমস্যা উত্তরণে সহযোগিতা করবে। তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী ফারেগ হওয়ার পর নিজের আদর্শ বিচ্যুত হতে পারে- এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ।
ফুযালা সম্মেলন সব প্রতিষ্ঠানের করা প্রয়োজন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের লম্বা একটা ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে, যেখান থেকে হাজারও শিক্ষার্থী বের হয়েছে তারা এরকম আয়োজন করতে পারে। যাতে করে সবার মধ্যে সম্প্রীতিটা বজায় থাকে।
উল্লেখ্য, জামিয়া রাহমানিয়ার ফুযালা সম্মেলন অংশগ্রহণের জন্য চলছে রেজিস্ট্রেশন। রেজিস্ট্রেশন চলবে আগস্টের শেষ নাগাদ ৷
দেশ-বিদেশে রাহমানিয়ার ফারেগীন (হিফজ, দাওরা, ইফতা ও তাফসীর)সহ আগ্রহী প্রাক্তন অন্যান্য ছাত্রদেরও দ্রূত রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ৷ সেই সাথে প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে সম্মেলনসহ জামিয়া রাহমানিয়ার সকল কার্যক্রমকে সফল করার আহ্বান জানানো হয়েছে ৷
রেজিস্ট্রেশন বা সম্মেলন সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন -01733656408
দোয়া নিয়ে সমর্থনের প্রচার; অশ্বস্তিতে শীর্ষ আলেমরা
-আরআর