সুলাইমান সাদী : সম্প্রতি ভারতের এক মুসলিম দম্পতির সঙ্গে লখনৌর একজন পাসপোর্ট কর্মকর্তা ধর্মীয় নিগ্রহ প্রকাশ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সরে যেতে হয় ওই কর্মকর্তাকে। ফিরিয়ে দেয়া হয় তাদের পাসপোর্ট।
গত কয়েকদিন আগে ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে এক দম্পতি পাসপোর্ট নবায়ন করতে গেলে বিকাশ মিশ্র নামের ওই কর্মকর্তা তন্বী শেঠের স্বামী আনাস সিদ্দিকীকে ধর্মান্তরিত না হলে পাসপোর্ট ফেরত না দেয়ার হুমকি দেয়। ১২ বছর আগে বিয়ে করা এ দম্পতি পরবর্তীতে ওই কর্মকর্তার এমন আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ট্যাগ করে লেখা টুইটে তন্বী শেঠ বলেন, একজন মুসলিমকে বিয়ে করেও কেন পদবী বদল করিনি সেই প্রশ্ন তুলে আমার পাসপোর্টের নবায়ন আটকে দেন বিকাশ মিশ্র নামের ওই অফিসার। সবার সামনে আমাকে অপমান তো করাই হয়, এমনকি আমার স্বামীকে ডেকে পাঠিয়ে বলা হয় যে, হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করলে তবেই পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে।
টুইটবার্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের নজরে এলে তিনি নিজে হস্তক্ষেপ করেন ওই দম্পতির পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিতে। অবশেষে ওই দম্পতি তাদের পাসপোর্ট ফেরত পান। তবে তাদের হেনস্থা করার দায়ে পাসপোর্ট অফিস থেকে সরে যেতে হয়েছে বিকাশ মিশ্রকে।
লখনৌ পুলিশ ঘটনাটি নতুন করে তদন্ত করা শুরু করে। তদন্তে দম্পতির পাসপোর্টে বিভিন্ন অসঙ্গতি দেখিয়ে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে ওই দম্পতির পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে বিদেশে চলে যাওয়ার পর দেশে ফিরে দেখেন সুষমা স্বরাজের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে ওই দম্পতির পক্ষ নেয়ায়। সোশ্যাল মিডিয়াসহ দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও সুষমাকে এ বিষয়ে তিরস্কার করা শুরু করেছে।
দেশে ফিরে হঠাৎ ঝড়ের মুখে পড়া সুষমার পাশে দাঁড়িয়েছে আবার কংগ্রেস। সুষমার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে রাহুল গান্ধীর দল। জানিয়েছে সহমর্মিতা।
এদিকে সুষমা স্বরাজ তার আত্মপক্ষ সমর্থনে পাল্টা টুইট লিখেছেন। টুইটে তিনি দলের যারা তার বিরুদ্ধে বিশোদগার করেছে তাদেরকে তিরস্কার করে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন।
অবশ্য শেষমেশ একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন এখন সুষমা। যে দম্পতির পাসপোর্ট উদ্ধার করে দিয়েছেন তাদের সে পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে পুলিশ। তাদের সে পাসপোর্টে কোনো ত্রুটি পাওয়া গেলে এর জের গিয়ে পড়বে স্বয়ং এ মন্ত্রীর কাঁধে। তখন সমালোচনা শুধু সমালোচনায় সীমিত থাকবে না। মোড় ঘুরিয়ে ঘটনা প্রবাহিত হতে পারে অন্য কোনো খাতে।
‘বোরকা নিষিদ্ধ, পরবর্তী পদক্ষেপ মসজিদ বন্ধ করা’