মুমিনুল ইসলাম: প্রকৃতি ও পরিবেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু গাছ। কিন্তু এই গাছ মানুষের কাছে বৈরী আচরণই পাচ্ছে। পেরেক ঠুকে গাছে ব্যানার, ফেস্টুন বা বিজ্ঞাপন দেওয়ায় রোগাক্রান্ত হচ্ছে গাছ, নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেরেক ঠুকলে গাছের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
দিনাজপুর শহরসহ ১৩টি উপজেলা শহর এবং সড়ক-মহাসড়কের গাছের অস্তিত্ব বিলীন করতে যেন নামা হয়েছে প্রতিযোগিতায়। গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন, ব্যানার ও ফেস্টুন। এতে গাছগুলো রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। প্রশাসনিকভাবে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরের বাসিন্দারা।
দিনাজপুর শহরের সুইহারী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে, বালুয়াডাঙ্গা, কাচারি মোড়, পাহাড়পুর, মহারাজা মোড়, ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড, পুলহাট, সরকারি কলেজ মোড়, উপজেলা চত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের গাছে গাছে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন, ব্যানার ও ফেস্টুন। জেলার ১৩টি উপজেলা শহর এবং সড়ক-মহাসড়কের ধারের প্রায় সব গাছে বিজ্ঞাপন ঝুলছে।
পেরেক ও তারকাটা দিয়ে লাগানো এসব বিজ্ঞাপনে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার, চিকিৎসক, হারবাল ওষুধ কোম্পানিসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ছবি, তাদের ছবিযুক্ত পোস্টার।
সুইহারী এলাকার বিজয় কুমার বলেন, ‘একসময় গাছগুলোর অবস্থা এ রকম ছিল না। কিন্তু দিনের পর দিন প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে। অনেক গাছই মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।’ এতে শহরের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর হাম্মাদুল বার বলেন, ‘গাছের জীবন আছে, কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারে না।
এই পেরেক মারাত্মকভাবে গাছের ক্ষতি এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করছে। পেরেক মারায় বাকলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেই পথ দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে গাছকে রোগাক্রান্ত করছে এবং জাইলিম ভেসেল ও ফ্লয়েলের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। ফলে উদ্ভিদের ক্ষতিসাধন হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে গাছ মরেও যাচ্ছে।’ গাছ ও প্রকৃতি রক্ষার জন্য মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘গাছ রক্ষা পেলেই পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষা পাবে। বাঁচবে মানুষের জীবন।
আরো পরুন- জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনকে ভণ্ড বলে আখ্যা দিলো যুক্তরাষ্ট্র