অাওয়ার ইসলাম : সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের জন্য ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছিলো শিক্ষার্থীরা। কোটা আন্দোনলকারীদের দাবি মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। কিন্তু দেড় মাস অতিবাহিত হলেও প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় হতাশা বেড়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। সৃষ্টি হয়েছে চাপ ক্ষোভের।
এছাড়া আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছেন আন্দোনলকারী শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক এপিএম সোহেল।
তিনি গণমাধ্যমকে সেই নৃশংস হামলার বর্ননা দিয়েছেন। বলেছেন, পুরান ঢাকায় বিশ্বজিতকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল তাকেও সেভাবে খুন করে চেয়েছিল হামলাকারীরা।
হামলার শিকার সোহেল বলেন, আমি শুরু থেকেই জবিতে কোটা আন্দোলন সংগঠিত করে আসছি। যে কারণে অনেকেই আমাকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল।
সর্বশেষ ২৪ মে পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে আমার ওপর হামলা চালায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল গ্রুপের ১০ থেকে ১২ জন কর্মী। তারা আমার ওপর অতর্কিত হমলা চালায়।
সোহেল বলেন, তারা শুধুমাত্র হামলা করে ক্ষান্ত হননি। ‘কোটা আন্দোলনের সময় আমাদের কিছু লাইভ ভিডিও ছিল, সেখান থেকে আমার ভিডিওর কিছু অংশ কেটে তার সঙ্গে আমারই কিছু বান্ধবীর ছবি জুড়ে দিয়ে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে। এভাবে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।
আমার বান্ধবীরাও মিডিয়ার সামনে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। যারা এই ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানাচ্ছি আমি।
সোহেল আরও জানান, হামলা হয়েছে প্রকাশ্যে এবং তার ভিডিও ফুটেজও রয়েছে। তাহলে তাদেরকে (হামলাকারী) কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমি তাদের দৃষ্টন্তমুলক শাস্তির দাবি জানাই।
বর্তমানে ঢামেকে চিকিৎসাধীন সোহেলে শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ একটু ভাল আছি, গত দুইদিন শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা ছিল। আজ ব্যাথা একটু কম। আমাকে হাসপাতালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার বিকালে তাকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের বাইরে থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে সোহেলকে উদ্ধার করে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করে শিক্ষার্থীরা।
সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে এনে ভর্তি করা হয়। সোহেলের নাকের নিচের অংশের বাইরের দিকে আটটি ও ভেতরের দিকে দুইটিসহ মোট দশটি সেলাই পড়েছে। এছাড়া তার পিঠ জুড়ে এবং পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন : জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সংবাদ সম্মেলন