অাওয়ার ইসলাম: কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন শিশু ধর্ষণের মামলায় কারাবন্দী এক আসামি।
ঘটনাটি আদালতের নজরে আসায় জামিন বাতিলপূর্বক আবেদনে আসামির আইনজীবী ও তদবিরকারীকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
২৩ মে, বুধবার, বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল।
জাহিদ সরওয়ার বলেন, ‘মামলাটির আসামি জামিন নেওয়ার জন্য সব কাগজপত্র জাল করেছিল। মেডিকেল সার্টিফিকেট, এফআইআরসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র জাল করে জামিন নিয়েছিল। পরে বিষয়টি ধরা পড়ে বিচারিক আদালতে (নিম্ন আদালত)।
ঘটনাটি আমি শুনতে পেরে আদালতের নজরে আনি। এরপর আদালত আজকের তারিখে মামলাটি শুনানি করতে রাখেন। শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।’
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ঘটনা ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের চিনাশুখানিয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেন ঘর ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে ডেকে আনেন প্রতিবেশী এক মেয়েশিশুকে (১০)। একপর্যায়ে তিনি মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং বিষয়টি গোপন রাখতে হুমকি দেন।
একপর্যায়ে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ষণের ঘটনাটি সে তার মাকে জানায়। পরে মেয়েটির মা ঘটনায় বিল্লাল ভূঁইয়া, বিল্লালের দুই ভাতিজা রুবেল ভূঁইয়া ও হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়াকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার পর থেকেই আসামিরা গা-ঢাকা দেন। এরই মধ্যে ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেলে সে তথ্য সংযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
পরবর্তী সময়ে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি আসামি বিল্লাল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
পরে ২৪ এপ্রিল আদালতে জামিন আবেদন করেন বিল্লাল। ওই আবেদন খারিজ করে দেন গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।
গত ৯ মে, বুধবার নিম্ন আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন বিল্লাল।
হাইকোর্টে বিল্লালের জামিন আবেদনে বলা হয়, মেয়েটির বয়স ২১ বছর। তারা দুজন একে অপরকে ভালোবাসেন। কিন্তু মেয়েটির মা সেটি মেনে নিতে পারেননি।
এ ছাড়া আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেনি। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। মূলত হয়রানি করতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মেয়েটির মা।
আবেদনের সঙ্গে মামলার এফআইআর, মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার সার্টিফিকেট, নিম্ন আদালতের সব নথিসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জাল করে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
কিন্তু নথিপত্র জালিয়াতির বিষয়টি আদালতে ধরা না পড়ায় জামিন আবেদন ও উপস্থাপিত তথ্যের ভিত্তিতে শুনানি শেষে আসামি বিল্লালের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট। কিন্তু হাইকোর্টের এই জামিন আদেশ নিম্ন আদালতে গেলে জালিয়াতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আদালতের নজরে আসে।
আরো পড়ুন- যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হলে শুধু কাজা ওয়াজিব হয়