হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: সৌদি আরবের চির প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলো গতকাল দাবি করছিলো সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান গত ২১ এপ্রিল সৌদি শাহি মহলে অভ্যুত্থান চেষ্টাকালে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।
ইরানের কয়েকটি জাতীয় সংবাদ সংস্থা দাবি করেছে, রিয়াদের রাজ প্রাসাদে গত ২১ এপ্রিলের হামলায় সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের শরীরে দুটি বুলেট আঘাত হানে। এ ঘটনার পর থেকে তাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি, সম্ভবত তিনি মারা গেছেন।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি বলছে, ওইদিনের পর থেকে এখন পর্যন্ত সৌদি কর্তৃপক্ষ যুবরাজের কোনো ছবি অথবা ভিডিও প্রকাশ করেনি। এমনকি এপ্রিলের শেষের দিকে মার্কিন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পে তার প্রথম সফরে রিয়াদে গেলেও যুবরাজকে সেসময় ক্যামেরার সামনে দেখা যায়নি।
এর আগে, গত ২১ এপ্রিল বেশ কিছু সংবাদ সংস্থা জানায়, সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের রাজপ্রাসাদে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ওইদিন রাজপ্রাসাদের কাছে একটি ড্রোন চলে আসায় নিরাপত্তারক্ষীরা সেটি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি বিনা অনুমতিতে ড্রোনটি রাজপ্রাসাদ চত্বরে উড়ছিল।
স্থানীয় বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গোলাগুলির ওই ঘটনার সময় রাজপ্রাসাদ থেকে বাদশাহ সালমানকে কাছের একটি সামরিক স্থাপনায় সরিয়ে নেয়া হয়।
এই ছবিটি প্রকাশ করেন বাদের আল-আসকার
তবে এসব দাবিতে গুজব বলে গতকতাল ১৮ মে, ২০১৮ যুবরাজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের পরিচালক বাদের আল-আসকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে মুহাম্মদ বিন সালমানের একটি ছবি প্রকাশ করে।
ছবিতে বিন সালমানের সঙ্গে আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, বাহরাইনের বাদশাহ বিন ইশা ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসিওকে দেখা যায়।
তবে এই ছবি ঠিক কখন তোলা হয়েছে সে ব্যাপারে আসকার কোনো তথ্য না দিয়ে ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, কয়েকদিন আগে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির উদ্যোগে দুই ভাইয়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেখুন ও সাবস্ক্রাইব করুন আওয়ার ইসলাম টিভি
এদিকে, ডেইলি পাকিস্তানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিন সালমান এখনো মিশরে অবস্থান করছেন এবং তার বন্ধুদের নিয়ে ভালো আছেন। সম্প্রতি সৌদি সফর করা পাকিস্তান উলামা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আল্লামা তাহের মাহমুদ আশরাফি বলেছন, ২১ এপ্রিলের পরও সৌদি প্রিন্স বিন সালমান বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করেছেন।
সৌদি গণমাধ্যমে এ ধরনের কোন সংবাদ পরিবেশিত হয় নি যাতে বিন সালমানের জীবনের অশংকা প্রকাশ করা হয়। বরং সৌদিতে এ নিয়ে কোন আলোচনাই নেই। তার মতে, যে সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে এর পেছনে ইরানি শিয়ারা কলকাঠি নাড়ছে।
সূত্র: এক্সপ্রেস নিউ, ডেইলি পাকিস্তান
পড়ুন মুহাম্মদ বিন সালমানের সাক্ষাৎকার: ‘আমি নিজের স্বপ্নগুলো নিজে দেখে যেতে চাই এজন্য কাজে তাড়াহুড়া করছি’
-আরআর