আবদুল্লাহ তামিম: বিশ বছর ধরে একটি ভবনের বেসমেন্টে নামাজ পড়ার পর, এবার নিজস্ব মসজিদ বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে নিউইয়র্কের অভিবাসী বাংলাদেশিদের একটি ছোট মুসলিম কমিউনিটি।
হাডসন ইসলামিক সেন্টারের নামে ২০০৭ সালে জমি কেনা হলেও, ভবন নির্মাণের তহবিল সংগ্রহ করতেই অনেক বছর লাগলো।
স্থানীয় কর্মজীবী পরিবারগুলোর অনুদানে আর কয়েকটি কিস্তিতে ভবন নির্মাণের খরচ দেয়ার চুক্তিতে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
গত ২৯শে এপ্রিল রবিবার সকালে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরে বক্তব্য পর্ব শেষ হলে দেড় মিলিয়ন ডলারের নির্মাণ পরিকল্পনার মসজিদের কাঠামো উন্মোচন করা হয়।
কিন্তু পুরো আয়োজনে নারীদের কোন উপস্থিতি ছিল না, যারাও কিনা এই মসজিদের তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রেখেছেন।
ভিত্তিপ্রস্তর আয়োজনে নারীদের কোন উপস্থিতি ছিল না, যারাও কিনা এই মসজিদের তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রেখেছেন।
এই বিষয়টি ফেসবুকে তুলে ধরেন সেখানকার একজন মুসলিম নারী জাবিন আহমেদ রুহি।
তিনি লিখেছেন, ''যদিও আমন্ত্রণ পত্রে লেখা ছিল, প্রিয় ভাই ও বোনেরা-কিন্তু পুরুষদের পরিষ্কারভাবে বলে দেয়া হয়েছিল যে, সমাবেশটি মেয়েদের জন্য নয়।"
একে নারী আর তরুণী মেয়েদের জন্য বৈষম্যমূলক বলে তিনি বর্ণনা করেছেন।
রুহি লিখেছেন, ''ইসলাম সবার জন্যই, এই কমিউনিটির নারীরা যা আছে, তা সবসময়েই ইসলামিক সেন্টারের কাজে লাগিয়েছে, কিন্তু আমাদের মুসলিম ভাইরা কখনোই তাদের স্বাগত জানাননি।''
তবে স্বাগত জানানো হোক বা না হোক, নারীরা এই সেন্টারকে সহায়তা করে যাবেন বলেও তিনি জানান। 'কিন্তু আমি অন্তত নীরব থাকবো না, বলছেন রুহি। তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হয়েছে তীব্র।
রুহি জানিয়েছেন, কমিউনিটিকে ব্যাঙ্গ করার আর মসজিদটি নির্মাণে বাধা তৈরির অভিযোগ তোলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। পরিবারের পুরুষ সদস্যদের অপমান করা হয়েছে এবং তার মার সঙ্গেও ঠাণ্ডা আচরণ করেছেন সহকর্মীরা।
কিন্তু বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরার জন্য নারীদের কাছ থেকে সমর্থনও পাচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
তবে হাডসন ইসলামিক সেন্টারের প্রেসিডেন্ট আবদুল হান্নান বলেছেন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে মেয়েদের অনুপস্থিতির কারণ আসলে 'যোগাযোগের ভুল'।
মি. হান্নান বলেছেন, সেখানে নারীদের জন্য যথেষ্ট জায়গা ছিল না এবং নিরাপত্তার কারণে কমিউনিটির সব সদস্যকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
যদিও শহরের যেসব কর্মকর্তারা সেখানে গিয়েছিলেন এবং বক্তব্য দিয়েছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন নারীও রয়েছেন।
''এটা (অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা) যদি অমুসলিম নারীদের জন্য ঠিক হয়, তাহলে মুসলিম নারীদের জন্যও ঠিক হতো'' বলছেন রুহি।
রুহি জানান, এই কমিটির বেশিরভাগ সদস্যই প্রথম প্রজন্মের বাংলাদেশি অভিবাসী এবং তারা তাদের দেশের মতো করেই সেন্টারটি পরিচালনা করেন।
আরো পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন সহিংসতায় নিহত ১৬