মনযূরুল হক
দেওবন্দ ফেরত ছাত্রদের মুক্তিতে এগিয়ে আসুন। এরা আমাদের সেরা সন্তান। দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা যারা রাখেন, তাদের ইলমি যোগ্যতা সাধারণ বহু টাকেখাওয়া আলেমের চেয়ে বেশি— তাতে সন্দেহ করার সাহস কার আছে?
জাতীয়তাবাদের ধোঁয়া তুলে যারা মানুষকে ইলম অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে— দোষটা তাদের। এরাই সীমান্তে এদের অবৈধ পন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পূর্ব থেকেই দেওবন্দের সঙ্গে এদেশের আলেম সমাজ যোগাযোগ রেখে চলেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দ এদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
দেওবন্দের প্রধান অনুসারী জমিয়তের নেতৃবৃন্দকে মুক্তিযুদ্ধের বিদেশি বন্ধু হিসেবে পুরস্কৃতও করেছে সরকার। কিন্তু তারপরও কেনো দেওবন্দে লেখাপড়া করতে যাওয়া ছেলেদের বাধা দূর হচ্ছে না— বুঝতে কষ্ট হয়।
ভারত কি এদেশে তাদের কীর্তি ছড়িয়ে দিতে চায় না? ছেলেগুলোকে জঙ্গি বলা হচ্ছে— কেনো? নিশ্চয়ই তারা জানে, এরা দেওবন্দ ফেরত আলেম এবং সামান্য খোঁজ নিলেই নিশ্চিত হতে পারবে। তাহলে কি দেওবন্দকেও জঙ্গিবাদিতায় টানতে চায়?
এদের পক্ষে জনমত গঠন করা জরুরি, সর্বশক্তি নিয়োগ করে নিরীহ মেধাবী তরুণ আলেমদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেবার পক্ষে কাজ করুন।
মানুষ ধরেই যারা জঙ্গি প্রমাণে উঠে পড়ে লাগে, সেই সব নরাধমকে উপযুক্ত জবাব দিতে এগিয়ে আসুন। উপমহাদেশে অন্যায়-নির্যাতনের বিরুদ্ধে যারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে যুগের পর যুগ ইলম ও ইসলামের আমানতকে আমাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছে, অবৈধ কাঁটাতারের সীমানা কোনোদিন যাদের পথ রুদ্ধ করতে পারে নি, তাদের সীমান্তে গ্রেপ্তার করা প্রকারন্তরে মনবতাকেই অপমান করা বৈকি ।
স্বীকার করছি, দেশীয় আইনে তারা অপরাধীই বটে । কিন্তু যে-আইন মানুষকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখার জন্যে জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে থাকে যুগের পর যুগ, সেটা কী করে আইন হয়? সে-আইন ভাঙায় নৈতিক অন্যায় কতখানি?
[উল্লেখ্য, গত পরশু ভারতের ত্রিপুরায় ২৪ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে, যারা দেওবন্দসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনে গিয়েছিল। তারা এখনো জেলে বন্দি]
দেওবন্দে তানভীর মোশাররফের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
-আরআর