আবদুল্লাহ তামিম: দেশের সর্বোচ্চ পরীক্ষা বিসিএস এর মাধ্যমে নারী ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী যাতে সমান সুবিধা নিতে পারে এই লক্ষ্যে সরকার বিসিএসে উত্তীর্ণদের (প্রিলিমিনারী, লিখিত ও মৌখিক তিনটিতেই উত্তীর্ণ) থেকে নারী, উপজাতি বা পশ্চাৎপদ অাদিবাসীদের থেকে মোট ৫৫ শতাংশ প্রার্থীদের ‘কোটা পদ্ধতি’র ভিত্তিতে চাকরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রাধিকার দেয় ।
বর্তমানে দেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটার কথা বলা আছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ করে, পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য, আর প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে এক শতাংশ কোটা। বাকি ৪৪ শতাংশ মেধা কোটায় বরাদ্দ।
সরকারি চাকরির মোট ৫৬ অংশ কোটায় চলে গেলে মেধাবীদের জন্য বাকি থাকে মাত্র ৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে দেখা যায় প্রতিবছরই খালি থেকে যায় অনেক কোটা। কোটা পদ্ধতির এ তালিকা সংস্কার করলে মেধাবীরা চাকরির সুযোগ পেত।
কোটার শূন্য পদগুলো পূরণ করতে মুক্তিযোদ্ধা, আদিবাসী ও নারীদের জন্য ৩২তম বিশেষ বিসিএস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পিএসসি। অথচ ওই বিসিএসেও মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৮১৭টি, নারী ১০টি ও উপজাতির ২৯৮টিসহ মোট এক হাজার ১২৫টি পদ শূন্য রাখতে হয়। শেষ পর্যন্ত ৩৩তম বিসিএসের মাধ্যমে এ পদগুলো পূরণের সিদ্ধান্ত হয়। অথচ ৩২তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ৯১২ জনই চাকরির সুযোগ পাননি।
শুধু কী বিসিএস? গত বছর ৯ হাজার ৬০৯ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ করা হয়। এসব পদের মধ্যে ২ হাজার ৮৮২টি পদ মুক্তিযোদ্ধার কোটাভুক্ত ছিল। কিন্তু এর জন্য প্রার্থী পাওয়া গেছে মাত্র ১০১ জন। শুধু পিএসসি বা সরকারি চাকুরি নয়, কোটার প্রার্থী না পাওয়ায় রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংকগুলোতে হাজার হাজার পদ শূন্য থাকছে। অথচ লাখ লাখ ছেলেমেয়ে পাস করে বের হওয়ার পর চাকুরি পাচ্ছে না।
এ জন্যই কোটা সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্যই আন্দোলনে নেমেছে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন : যে ৫ দাবিতে উত্তাল কোটা সংস্কার আন্দোলন