রোকন রাইয়ান
আওয়ার ইসলাম
মৌলিকভাবে কোটা পদ্ধতি সমর্থনযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও শোলাকিয়া ঈদগাহ’র ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি জানান, দেশ পরিচালনায় মেধাবীদের উঠে আসা জরুরি।
চাকরি ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই আন্দোলন করে যাচ্ছেন মেধাবীরা। সম্প্রতি সে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গতকাল সারাদেশে একযোগে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। ঢাকার শাহবাগে জড়ো হয় আন্দোলনকারী বিশাল অংশ। যাদের সঙ্গে একসময় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। যে কারণে তারা সেখানে অবস্থানের ঘোষণা দেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরাও। কারণ বর্তমানে ৫৬ পার্সেন্ট কোটা রয়েছে যাতে মেধাবীরা উপেক্ষিত থাকছেন।
একজন চাকরি প্রার্থীর যোগ্যতা মাপতে হবে তার মেধা দিয়েই। এমনটাই জানালেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব ও লালবাগ জামিয়ার মুহাদ্দিস মুফতি ফয়জুল্লাহ।
আওয়ার ইসলামকে তিনি বলেন, অবশ্যই প্রতিটি মানুষকে তার যোগ্যতা, মেধা, নৈতিকতা ও চরিত্র মাধুরী দিয়ে মাপতে হয়। এগুলোই হলো যোগ্যতার মাপকাঠি। এখন যদি নির্দিষ্ট করে কোনো কোটায় লোক নিয়োগ পায় তাহলে মেধাবীরা বঞ্ছিত হবে।
তিনি আরও বলেন, এটাকে মেধাবীদের জন্য একটা অপমান বলেই মনে হয়।
তবে কোটা পদ্ধতি যদি একান্তই রাখতে হয় তাহলে ক্ষুদ্র একটা অংশ রাখা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন তিনি। বলেন, কিছু ক্ষেত্রে সরকার যদি একান্তই কোটা রাখতে চায় তাহলে ক্ষুদ্র একটা অংশ রাখা যেতে পারে কিন্তু যে বিশাল আয়তনে কোটা ব্যবস্থা রয়েছে তার পক্ষে আমি নই।
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ৩০, জেলা ১০, নারী ১০ এবং উপজাতি কোটা ৫ শতাংশ৷ এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে এক শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী নিয়োগের বিধান রয়েছে দেশে।
তবে সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, আধা-স্বায়ত্বশাসিত, বিভিন্ন করপোরেশন ও দফতরে সরাসরি নিয়োগে জেলার জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলাওয়ারি কোটা পুনঃনির্ধারণ করা হয়৷ সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলাওয়ারি কোটা নির্ধারণ করা হয়েছিল৷
চলমান কোটা পদ্ধতি মৌলিকভাবে সমর্থন না করলেও মুক্তিযোদ্ধা ও পিছিয়ে পড়াদের জন্য এক তৃতীয়াংশ রাখা যেতে পারে মনে মত দিয়েছেন আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।
তিনি বলেন, পিছিয়ে পড়া জাতিকে এগিয়ে আনার জন্য যদি এ কোটা ব্যবস্থা রাখা হয় তাহলে এক তৃতীয়াংশ কোটা বিবেচনাসাপেক্ষে রাখা যেতে পারে। এর বেশি রাখা উচিত নয়।
তিনি বলেন, কোটা পদ্ধতির মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান রয়েছে। দেশের জন্য যেহেতু মুক্তিযোদ্ধারা বিপুল অবদান রেখেছেন তাই তাদের সন্তানদের জন্য একটি অংশ রাখা যায়। সেটাও যেন বেশি না হয় সে দিকে দৃষ্টি রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের ট্রামকার্ড ইসলামি দল: টানছে উভয় জোটই
তবে মৌলিকভাবে কোটা পদ্ধতি মেধাবিরোধী জানিয়ে তিনি বলেন, কোটা হলো মেধাবীদের জন্য পথরোধক। যা সরিয়ে ফেলাই উচিত। তাহলে দেশ পরিচালনায় আমরা মেধাবীদের দেখতে পাবো।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার হিসেবে কোটা পদ্ধতির পবর্তন করেছিলেন। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট তাকে সপরিবারে হত্যার পর এই কোটা বাতিল করা হয়৷
২৪ বছর মুক্তিযোদ্ধাদের এই কোটা দেয়া হয়নি৷ ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য আবার কোটা চালু করেন৷
আরও পড়ুন: যে ৫ দাবিতে উত্তাল কোটা সংস্কার আন্দোলন
[আওয়ার ইসলাম বৃহত্তর কলেবরে প্রকাশ করতে যাচ্ছে রমজানুল মোবারক সংখ্যা, আপনার মাদরাসা-স্কুল বা কোম্পানির বিজ্ঞাপন দিয়ে সহযোগিতা করুন। আপনার কপি সংগ্রহ করতে ফোন করুন 01717831937 বিকাশ]