শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


পাঁচ তরুণের কবিতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সম্ভাবনা
আশরাফ জুয়েল

আয়ু বেড়ে যাওয়ায় আকাশের চোখে ঝিমুনি আর
মানুষেরা হয়ে উঠছে আগাছার শেকড়

আমি অন্তত এমন একজন কবিকে চিনি
যিনি মাটির সাথে পায়ের সংযোগস্থলকেই ভাবছেন
আকাশ। মানুষ মৃত্যুমুখো।

একদিন বিমান, মানুষ আর পাখি একই
আকাশে ঘুমোবে- কারুরই পা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

গাছের পোশাক পরিবর্তিত হচ্ছে।
অথচ রাস্তার কুকুরের লোম দিয়ে সংবিধান বুনছে দুনিয়ার
মোড়লেরা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কনডোমে নতুন কোন
ফ্লেভার দেয়া যায় সেটা নিয়েই ব্যস্ত।

কার্তুজ খেতে খেতে পেট ফাঁপিয়ে ফেলা
ধর্মগ্রন্থগুলো নালিশ জানানোর উপযুক্ত ঠিকানা না
পেয়ে ক্রমশ ড্রামবাদক হয়ে উঠছে আর পিঁপড়ার কাঁধে
মহাকাশ বিজ্ঞান।

সব আঙুল ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রত্যাশা সেখান থেকে নতুন তর্জনী গজাবে একদিন।

দৃষ্টি
কিয়াস আহমেদ।

মুমিন বান্দারা ঠিকই বলেছিলেন শালীনতার ব্যাপারে
আপনার হাতাকাটা পোশাকটা আমাকে শিহরিত করে
আমি বিঘোর হয়ে পড়ি আপনার ডানা দেখে

আপনার লম্বা চুলে আমি পাগল হয়ে যাই
এবং আপনার চুলের বাদামি রঙে,

আপনার পায়ের ঘোরালিটা যখন উঁচু হয়ে থাকে
হিল জুতোর কৌশলে আর আপনি সোজা রাস্তায়
কেমন যেন বাঁকা বাঁকা হাঁটতে থাকেন

আপনার হাঁটুর মানচিত্রটা আমার বুকে চিনচিনে একটা
আকাশ মেলে ধরে যার এক দৃষ্টিতে ৬০ লক্ষ তারা দেখতে পাই,

আপনার কপালের কালো টিপ ঠোঁটের লাল লিপিস্টিক
আর কানের পাশ ঘেঁষে নেমে আসা ঘাম
সমস্ত কিছু আমার ভেতরে উগ্রবাদী রোমান্স জাগিয়ে তোলে!

শুনেছি মুমিন বান্দরা গায়েব জানে না
কিন্তু শালীনতার ব্যাপারে তারা যা যা বলে
তার সবকিছু আপনাকে দেখার পর আমার মনে পড়ে
শুধু একটি কথাই আমার মনে পড়ে না যে

মুমিনদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে।

দ্য রেইনি সিজন-১১
হাসানত শোয়েব

চরিত্র
তুমি পিতার কবরের পাশে বসে ম্যান্ডোলিন বাজাও? ম্যান্ডোলিন না, দেখতে ম্যান্ডোলিনের মতো; এটার নাম পিয়েতা। মায়ের মৃত্যুতে পিয়েতা বাজে না। পিয়েতা বাজাতে হয় পিতার মৃত্যুতে। পিতার দেশের নাম কি? দেশের নাম নাচোল, গ্রাম সঞ্জীবনী। তিনি ভুলে যাচ্ছেন মারফি ব্রান্ডের রেডিও। পিতা, তুমি পিয়েতা বাজাবে, রকস্টার?

গল্প
এখানে তোমাদের বাড়ি, যেখানে তোমরা সেক্স করো? এখানেই কি বর্ষাকালে তোমরা মৃত সন্তান প্রসব করেছিলে? নাহ, এগুলা সব ঈশপের গল্প। গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক।

দৃশ্য
আসো, তোমার ঘাড়ে ট্যাটু এঁকে দেই। পিতার মৃত্যু, পিয়েতা, নাচোল, রকস্টার, বর্ষাকাল, মৃত সন্তান, ঈশপ। আর কিছু? এখন সন্ধ্যাবেলা, আসো ডিপ্রেশন আর পবিত্রতার মধ্যে পার্থক্যগুলো আলাদা করে রাখি।

উপকথা
শামশাম তাজিল

বাতাসে শুধু মেঘের তোড়জোড়,
দিনের আলো নিভিয়ে দিল তারা।
পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে দ্বিধা __
একাই বাড়ি ফিরছে অপেক্ষারা।

ফিরেছে পাখি? কুলায় ফিরে ভয়
কাটাতে গিয়ে হারিয়ে এলো পাখা।
জলের বেগে ভাসতে থাকে নদী,
স্রোতের গতি বইছে আঁকাবাঁকা।

সাঁঝেরবাতি জ্বালিয়ে দিয়ে নারী
কুড়িয়ে আনে হারিয়ে ফেলা স্মৃতি।
ঝড়ের রাতে ফেরে না সব লোক,
গুমের দেশে সহজ রাজনীতি!

চোখের কোণে গড়িয়ে পড়ে জল,
রক্ত বৈ ঝরে না কিছু আর।
সবাই মিলে এই কি বেঁচে থাকা?
মৃত্যু ছাড়া আছে কী হারাবার!

দ্বৈরথ
সাদী কাউকাব

১.
বিরহে পেলে মিস করি মসজিদ
বিরহে পেলে মনে পড়ে সুর
আল্লা কেনো প্রেয়সীর বৈরী বিধুর
আল্লা ততো কাছে প্রেয়সী যতোদূর
প্রেয়সী যতো কাছে আল্লা ততোদূর
২.
পাপে ডুবে থাকি পরম
মাথা তুলে কোনোদিন বাড়াই নাই মুখ
পুণ্যের সঙ্গে কোনোকালে মেলে নাই সাক্ষাৎ
হেনকালে পাড়ি যদি আফসোস তাই—
আর কোনো কাজে জড়াই নাই জীবন।

এসএস
আরো পড়ুন : কবিতার ভবিষ্যত; একটি সিদ্ধান্তহীন বোঝাপড়া


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ