হামিম আরিফ: তাবলিগ জামাত ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিষয়ে চলমান সঙ্কট সমাধানের জন্য রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক মসজিদে অনুষ্ঠিত উলামা জোড়ে ৫ টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে আজ সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয় এ জোড়। এতে ঢাকার শীর্ষ উলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।
সভায় তাবলিগ জামাত ও মাওলানা সাদ বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১. বাংলাদেশের সব উলামায়ে কেরাম মারকাজের উলামা শুরা হজরগণের সাথে একাত্ব হয়ে তাদের রাহবারিতে নিজ নিজ হালকা/এলাকা/মসজিদে কাজ করবেন।
২. মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও তার অনুসারীবৃন্দ সাথীদের তথা (ওয়াসিফুল ইসলাম, খাঁন সাহাবুদ্দীন নাসিম, ইউনুস শিকদার ও তাদের অনুসারীবৃন্দের) কোনোরূপ সহযোগিতা করা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকবেন (যতোদিন পর্যন্ত তারা নিজেদের অবস্থান থেকে ফিরে না আসে)।
৩. উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে সাধারণ সাথীদের তাবলিগ জামাতের বর্তমান সঙ্কট সম্পর্কে ওযাহাতি বয়ান তথা বর্তমান নাজুক হালত সম্পর্কে অবহিত করার ব্যবস্থা করা।
সুতরাং নিজ হালকা/এলাকা/মসজিদওয়ারী ওযাহাতি মজলিসের ব্যবস্থা করতে হবে। তাবলিগের জিম্মাদার সাথীদের উলামা ও সাধারণ সাথীদের নিয়ে এ ধরনের মজলিসে এন্তেজামের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
৪. দারুল উলুম দেওবন্দ সর্বশেষ ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে জরুরি ঘোষণা দিয়ে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর ব্যাপারে অনাস্থা প্রকাশ করেছে এবং আশঙ্কা করেছে, মাওলানা সাদের মতাদর্শ উক্তিগুলো দ্বারা নতুন ফেরকা উৎপত্তি হতে যাচ্ছে।
সর্বোপরি তিনি তার সর্বশেষ রুজুর পরেও পূর্বের ধারবাহিকতা অব্যাহত রেখে আপত্তিকর বয়ান করে চলেছেন।
অন্যদিকে নিজামুদ্দিন মারকাজ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। তাই যতোদিন পর্যন্ত মাওলানা সাদ আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করা ছেড়ে দিয়ে দারুল উলুম দেওবন্দকে আস্থাশীর না করেন এবং যতোদিন পর্যন্ত মাওলানা সাদ তার মুরব্বীদের পরামর্শ মেনে নিজামুদ্দিন মারকাজের বিভেদ ও কলহ নিষ্পত্তি না করেন ততোদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের তাবলিগের সাথীদের নিজামুদ্দীন যাওয়া ও মাওলানা সাদ থেকে কোনোরূপ রাহবারি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
এহেন পরিস্থিতিতে কোনো সাথীদের নিজামুদ্দিন গমন করা ও তার রাহবারি গ্রহণ করা সাথীদের জন্য ও বাংলাদেশের তাবলিগের কাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে মনে করা হচ্ছে।
৫. বর্তমান সঙ্কট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নিজামুদ্দিন থেকে কোনো জামাত বা কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশে আগমন করা কাজের জন্য মুনাসিব নয়। তাই বাংলাদেশের কোনো হালকা/এলাকা/মসজিদে তাদের জামাতকে (উলামায়ে কেরামগণের পরামর্শ ব্যতিত) এস্তেকবাল না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
সকাল থেকে শুরু হওয়া এ উলামা জোড়ে ঢাকার শীর্ষ আলেমগণ একে একে বক্তব্য দেন এবং তাবলিগ জামাতের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।
জোড়ে উপস্থিত মাওলানা ফজলে রাব্বি জুনায়েদ জানান, জোড়ে ঢাকার শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদাবাদ জামিয়ার মুহাতিমম ও শাইখুল হাদিস মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, ফরিবাদ জামিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুল আমিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, লালবাগ জামিয়ার মুহাদ্দিস মুফতী ফয়জুল্লাহ, মুফতী কেফায়াতুল্লাহ আজহারী, মুফতী সাইফুল ইসলাম (বড় কাটারা মাদরাসা) প্রমুখ।
আরও পড়ুন: তাবলিগ ইস্যুতে ওলামাদের প্রতি আল্লামা আশরাফ আলীর ৪ আবেদন
তাবলিগ বিষয়ে উলামা জোড় চলছে; আসছে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
-রোরা