হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: তাবলিগ জামাতে আমির ও আলমি শুরা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। কোনটা মানা হবে কোনটা মানা হবে না এটি নিয়ে এখনো চলছে সমালোচনা।
এ বিষয়ে সম্প্রতি উপমহাদেশের অন্যতন ইসলামী স্কলার সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. এর একটি চিঠি স্যোশাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটে প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে তিনি আমির ও আলমি শুরা নিয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
চিঠিটি হুবহু অনুবাদ প্রকাশ করা হলো আওয়ার ইসলাম পাঠকদের জন্য।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আবুল হাসান আলী আন নদভি, নদওয়াতুল উলামা, লাক্ষ্মৌ, ভারত।
দাওয়াত ও তাবলিগের চেষ্টা মেহনতের যে গুরত্ব ও মাহত্ম অন্তরে আছে এবং এ কাজে যে অনুগ্রহ আমার ওপর রয়েছে এর ওপর দাওয়াতি কাজের যে গ্রহণযোগ্যতা আল্লাহ ও উম্মতের কাছে অর্জিত হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী এর যে বরকত দৃশ্যমান হয়েছে, নিজের অভিজ্ঞতায়ও যা এসেছে তার ভিত্তিতে অত্যন্ত চিন্তিত অবস্থায় আছি।
আল্লাহর অনুগ্রহে আদবের সাথে দুটি কথা আরজ করছি।
প্রথম কথা
হজরতজি ইলিয়াস রহ. ইন্তেকালের সময় যে শুরা নির্ধারণ করেছিলেন যে কোনো কুরবানি ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে তার হেফাজত জরুরি। তা সেভাবেই বাধাহীন রাখা উচিত। এর জন্য যতই মূল্য দিতে হোক না কেন।
বর্তমান অবস্থায় পুরো পৃথিবীর শত্রু মিত্রের দৃষ্টি আপনাদের প্রতিই নিবদ্ধ আছে।
মুহাব্বতকারী ও কাজের মজবুত সাথী এটাই চান যে গঠিত শুরার মাঝে সামান্য ফাটল সৃষ্টি না হোক এবং শত্রুরাও খুশি হবার সুযোগ না পায়। শয়তান তাকিয়ে আছে, নিন্দুক ও প্রতিদ্বন্দ্বীরা শুরার মাঝে অনৈক্য ও বিভক্তির আশা পোষণ করছে।
কিন্তু মুহাব্বতকারী ও একনিষ্ঠ সাথীরা চান শুরা, পারস্পরিক একাত্মতা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকুক।
দ্বিতীয় কথা
সবচে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, অভিজ্ঞতা, অন্তর্দৃষ্টি ও বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগতির আলোকে পূর্ণ নিষ্ঠা ও ভরসা নিয়ে এ কথা বলছি, বর্তমানে নিজামুদ্দীন মারকাজে আমির বা শুরা বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা যেন দিল্লি ও নিজামুদ্দীন মারাকজেই সীমাবদ্ধ থাকে।
এর জন্য যেন কখনোই পাকিস্তানে যাওয়া না হয়। পাকিস্তানে আমির বা শুরা বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও না নেয়া হয়।
আমি একজন অভিজ্ঞ, রাজনীতির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ও ইতিহাসের প্রতি সুক্ষ্ম দৃষ্টি নিবন্ধনকারী হিসেবে লিখছি, পাকিস্তানকে জড়িয়ে কোনো কাজ করলে শুধু হিন্দুস্তানেই তাবলিগের কাজ বন্ধ হবে তা নয় বরং দুনিয়াব্যাপী এ কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আর পাকিস্তান এটাকে আন্দোলনের একটা ইস্যু বানাবে ও সাংগঠনিক স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা করবে। অপরদিকে দিল্লির বাংলাওয়ালী মসজিদে যে আধ্যাত্মিকতা ও আল্লাহর নুসরত রয়েছে তা কোথাও পাওয়া যাবে না।
এ দুটি কথা বাস্তবতা, একান্ত অপারগতা ও পুরনো সম্পর্কের ভিত্তিতে দীনি দায়িত্ব হিসেবে আরজ করলাম। গায়েবের খবর আল্লাহই ভালো জানেন।
আরও পড়ুন: তাবলিগের সঙ্কট নিরসনে ঢাকায় উলামা সম্মেলন কাল