রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
আবারও সোনার দামে রেকর্ড ডেমরা যাত্রাবাড়ীর ৬০০ শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক সম্মাননা প্রদান কিশোরগঞ্জ নিকলীর হিলচিয়া মাদরাসা থেকে ছাত্র নিখোঁজ, সন্ধান চেয়ে পরিবারের আকুতি হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটি ঘোষণা উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই: ধর্ম উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি হেফাজতে ইসলামের সিংগাইরে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশ ২৯ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘জুলাই বিপ্লবে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদান ও প্রত্যাশা’ নিয়ে আলোচনা সভা সোমবার সিলেটে অনুষ্ঠিত বিহানের ‘লেখালেখি ও এডিটিং কর্মশালা’

ছেলেকে কলজে চিরে হত্যার পরও ইমাম শোনালেন শান্তির বাণী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে নৃশংসভাবে। কিন্তু তার জন্য তিনি একটুও বিচলিত নন। বরং এ নিয়ে যেন কোনো দাঙ্গা বা হামলা মামলা না হয় সেটা নিযে তৎপর তিনি।

ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আসানসোলের। এ এলাকার ইমাম মাওলানা ইমদাদুল্লাহ রাশিদি সম্প্রীতির এক অনন্য নজির তৈরি করেছেন।

রামনবমীর শোভাযাত্রার সময় তার কিশোর ছেলে সিবগাতুল্লাহ রাশিদিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীরা। তার বুক চিরে কলজে বের করে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলেছে দাঙ্গাবাজরা।

এরপরও শান্ত মাওলানা ইমদাদুল্লাহ বললেন, আল্লাহ আমার সন্তানকে যতদিন বাঁচার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন ততদিন বেঁচেছেন। আল্লাহর ইচ্ছায় তার মৃত্যু হয়েছে। তাকে যারা হত্যা করেছে, আল্লাহ্ তাদের কেয়ামতের ময়দানে শাস্তি দেবেন।

কিন্তু আমার সন্তানের মৃত্যুর প্রতিশোধ আপনারা নিন তা আমি চাই না। আমার সন্তানের মৃত্যুর জন্য একটি মানুষের ওপরও আক্রমণ চাই না। একটা বাড়িঘর, দোকানপাট কোথাও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা লুটপাট করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, ইসলাম আমাদের নিরীহ কোনো মানুষকে হত্যা করতে শেখায় না। ইসলাম আমাদের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে বসবাস করতে শেখায়। আমাদের আসানসোলে আজ শান্তিশৃঙ্খলার প্রয়োজন। আপনারা যদি আমায় আপন মনে করেন, তা হলে ইসলাম নির্দেশিত শান্তি বজায় রাখবেন। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব আপনাদের।

বইটি সংগ্রহ করতে অর্ডার দিন রকমারিতে

গত ২৫ মার্চ আসানসোলে কিশোর সিবগাতুল্লাহকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তার বাবা মাওলানা ইমদাদুল্লাহ রাশিদি আসানসোলের নুরানি মসজিদের ইমাম।

লাশের ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবার আসর নামাজের আগে সিবগাতুল্লাহর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সিবগাতুল্লাহর বুক চিরে কলজে বের করার মতো নৃশংসতার কারণে মুসল্লিরা ছিলেন প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।

কিন্তু ছেলের লাশের সামনে মাওলানা ইমদাদুল্লাহ উর্দুতে যে বক্তব্য দেন, তা সবাইকে রীতিমতো চমকে দেয়। সবাই ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণীকে নতুন করে অনুধাবন করেন। ইমামের বক্তৃতা ভারতের বহু সংবাদমাধ্যমেও স্থান পায়।

ইমামের বক্তৃতার বিষয়ে আসানসোলের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাসিম আনসারী বলেন, জানাজার ময়দানকে কারবালার ময়দান বলে মনে হচ্ছিল। যুবকদের চোখেমুখে ফুটে উঠছিল প্রতিশোধগ্রহণের প্রতিজ্ঞা। আমি প্রায় হাল ছেড়েই দিয়েছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম, না আর আসানসোলকে রক্ষা করা গেল না।

ইসলামী যিন্দেগী/আলেম উলামা ও সাধারণ মানুষের জন্য এক অনন্য অ্যাপ 

কাউন্সিলর আরও বলেন, জানাজা শুরুর আগে নিহত কিশোরের বাবা ইমাম ইমদাদুল্লাহ্ রাশিদি খুতবা দিতে উঠলেন। তার উর্দু বক্তব্য শুনে সঙ্গে সঙ্গেই পরিবেশ অদ্ভুতভাবে অত্যন্ত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। জানাজার শেষ হয়। প্রত্যেকেই নিজের নিজের বাড়ি ফিরে যান। মাওলানা ফিরে যান মসজিদে।

কাউন্সিলর নাসিম আনসারী বলেন, না আসানসোলের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্ত করার জন্য একজন পুলিশ বা একজন প্রশাসনিক লোকের দরকার পড়েনি। মাওলানার মোহিত করার বক্তব্যই পুরো পরিস্থিতিকে শান্ত করে দেয়।

ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা পেয়ে জানাজার মাঠে সবাই ক্ষুব্ধ থেকে ধীরে ধীরে শান্ত হন। মনে মনে দাঙ্গাবাজদের বিচার চান আল্লাহর কাছে।

আরও পড়ুন: ভারতে ১৬ বছর জেল খাটলো নির্দোষ ৫ মুসলিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ