আওয়ার ইসলাম: দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আদলে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা যাবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সরকার অনুমতি দেবে। এতে করে বন্ধ হয়ে যাওয়া শত শত ইবতেদায়ি মাদরাসা পুনরায় চালু করা যাবে।
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক যুগান্তর। পত্রিকাটি প্রতিবেদনে বলেছে, ইতোমধ্যেই এবিষয়ে কাজ শুরু করেছে মাদরাসা বোর্ড। তবে যে কোনো অনুমোদন দেয়ার আগে বোর্ডকে সরকারের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।
মাদরাসা করার শর্তের মধ্যে রয়েছে, ব্যক্তির নামে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা যাবে। তবে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত কোনো ব্যক্তির নামে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা যাবে না।
এ লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এটির নাম দেয়া হয়েছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন-ভাতাদি/অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৮।
২৫টি ধারা সংবলিত নীতিমালাটি বর্তমানে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিবের টেবিলে আছে। সচিবের অনুমোদনের পর সেটির ওপর মতামত নিতে জনপ্রশাসন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
২২ বছর ধরে এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন বন্ধ আছে। শুধু তা-ই নয়, সরকার কোনো উপযুক্ত বেতন-ভাতা না দেয়ায় এ ধরনের শত শত মাদরাসা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন নীতিমালার আলোকে অবশ্য এখন এ ধরনের নতুন-পুরনো মাদরাসায় সরকার বেতন-ভাতা দেবে।
এ প্রসঙ্গে নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, ‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ব্যাপারে আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুমোদন শেষে তা বাস্তবায়নের জন্য জারি করা হবে।’
মৃত্যুর পর সুখে থাকতে সন্তানকে দীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করুন: আল্লামা আবদুল কুদ্দুস
নব্বইয়ের দশকে একই পরিপত্রের আলোকে দেশে রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। এরপর সারা দেশে প্রায় ৩১ হাজার স্কুল এবং ১৫ হাজার মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রথম দিকে উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ৫০০ টাকা করে সম্মানী পেতেন। পরবর্তী কালে স্কুলশিক্ষকদের বেতন বিভিন্ন সময়ে বাড়ানো হয়। একটি পর্যায়ে তারা এমপিওভুক্ত হিসেবে সরকারি বেতন-ভাতা বা অনুদানভুক্ত হন। কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষকরা অবহেলিত থাকেন।
ওই পরিস্থিতির মধ্যেই ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের ২৬ সহস্রাধিক স্কুল জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। কিন্তু মাদরাসাগুলো আগের অবস্থায়ই থাকে। এ দীর্ঘ সময়ে বেতন-ভাতার অভাবে মাদরাসাগুলো একে একে বন্ধ হতে থাকে।
সর্বশেষ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এক হিসাবে সারা দেশে ছয় হাজার ৯৯৮টি মাদরাসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এর মধ্যে মাত্র এক হাজার ৫১৯টি মাদরাসার শিক্ষককে ৫০০ টাকা করে অনুদান দেয়া হচ্ছিল।
২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি শিক্ষকদের দাবির মুখে সরকার ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করে। এরপর আরও কয়েক দফায় বাড়িয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকরা দুই হাজার ৫০০ এবং সহকারী শিক্ষকরা দুই হাজার ৩০০ টাকা করে পাচ্ছেন।
স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকদের, পাচ্ছেন প্রাথমিকের সমমর্যাদা
আরআর