অাওয়ার ইসলাম: স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে সাত লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়ার পর সেই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন আলামিন নামে এক পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় ওই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে পাবনার আদালতে মামলা করেছেন স্ত্রী জান্নাতুল।
আলামিন বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেঞ্জে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার পাবনার আমলি আদালত-৩ এ মামলা করেন সাঁথিয়া উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস। মামলায় আলামিনের বাবা মিজানুর রহমান ও মা বুলবুলি খাতুনকেও আসামি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্য একই উপজেলার কাজীপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী জান্নাতুলকে তালাকনামা পাঠান তিনি।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সাত লাখ টাকা দেনমোহরে রেজিস্ট্রি ছাড়া জান্নাতুলের সঙ্গে আলামিনের বিয়ে হয়। চারদিন পর তিনশ’ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে নগদ পাঁচ লাখ এবং চেকের মাধ্যমে আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেন আলামিন। পরে জান্নাতুলের পরিবারের চেষ্টায় তার পুলিশে চাকরি হয়।
চাকরি পওয়ার পর থেকে আলামিন ও তার বাড়ির লোকজন আরও পাঁচ লাখ টাকার দাবিতে জান্নাতুলকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। টাকা দিতে না পারায় তারা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে জান্নাতুলকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
পরে কোনোভাবেই বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সুবিচার পেতে আদালতে মামলা করেন জান্নাতুল।
এ বিষয়ে জান্নাতুল বলেন, আমার সুখের আশায় বাবার রেখে যাওয়া গচ্ছিত টাকা দিয়ে এ বিয়ে হয়। অথচ আমার স্বামী আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি।
জান্নাতুলের মা নাসরিন নাহার বলেন, এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মেয়ের জামাইকে সাত লাখ টাকা দিয়েছি। পরে আরও টাকা খরচ করে তাকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়। চাকরি পেয়েই আলামিন আরও টাকার জন্য টালবাহানা শুরু করে।
তারপর এলাকাবাসীর চাপে ওদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। তারপরও আলামিন যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে মারধর করে জান্নাতুলকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এখন আমার মেয়েকে তালাকনামা পাঠিয়েছে আলামিন।
জানতে চাইলে বিষয়টি স্বীকার করে আলামিন বলেন, সংসারে নানা বিষয় নিয়ে জান্নাতুল খুবই খারাপ আচরণ করে বলে তালাকনামা পাঠিয়েছি।
মামলার আইনজীবী আব্দুর রউফ বলেন, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আলামিন যে যৌতুক নিয়েছেন, তার সব প্রমাণপত্র উপস্থাপন করার পর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২৪ এপ্রিল আসামিদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।