কাউসার লাবীব
চরমোনাই ময়দান থেকে
চরমোনাইয়ের পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীমের বয়ান, মুনাজাত ও মুসল্লিদের রোনাজারির মাধ্যমে শেষ হলো তিনদিনব্যাপী কীর্তনখোলার তীরের ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল।
আজ ফজরের পর তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান ও নসিহত পেশ করেন।
বয়ানে তিনি বলেন,'দুনিয়া চিরস্থায়ী থাকার জায়গা নয়, তাই কোনো বুদ্ধিমান দুনিয়ার মোহে পড়তে পারে না। দুনিয়া হলো আখেরাত কামাইয়ের জায়গা। এখানে থেকে যে তার পরলৌকিক জীবনকে যতবেশি সুন্দর করার চিন্তায় ব্যপৃত থাকবে সে ততোটাই সফল'।
চরমোনাইয়ের পীর বলেন,'বহুদূর থেকে আপনারা শত কষ্ট করে এসেছেন এবং খেয়ে না খেয়ে তিনদিন এ ময়দানে থেকেছেন। আপনার এ কষ্ট তখনই সফল হবে যখন আপনি এ তিনদিনে করা আমলগুলো ও শ্রবণ করা বয়ানগুলো নিজের জীবনে কাজে লাগাতে পারবেন'।
তিনি আরো বলেন, যদি আপনার কাছে এ তরিকাকে হক মনে হয় ও ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনি এ তরিকায় বায়াত হতে পারেন। অথবা আমি অনুরোধ করবো, যে কোনো হক্কানি পীরের হাত ধরে আখারাতের জীবনকে সুন্দর করে তুলুন'।
তার বয়ানের শেষে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের আয়-ব্যয়ের হিসেব, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষাবোর্ডের আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থিত মুসল্লিদের জানানো হয়।
তারপর পীর সাহেব চরমোনাই মুসল্লিদের মধ্য থেকে যারা মুরিদ হতে ইচ্ছুক তাদের মুরিদ করেন এবং আল্লাহর দরবারে সবাইকে নিয়ে তওবা করেন।
সবশেষে তিনি মুনাজাতের মাধ্যমে তিনদিনব্যাপী চলা ফাল্গুনের এ মাহফিলের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
তিনদিনব্যাপী চলা এ মাহফিলের স্টেজ পরিচালনা করেন পাঁচজন উপস্থাপক, বয়ান করেন প্রায় ২০ জন বক্তা, গজল পরিবেশন করেন প্রায় ১২ জন কণ্ঠশিল্পী, স্টেজ নিরাপত্তায় ছিলেন একদল চৌকশ বাহিনী। আর স্টেজ তত্ত্বাবধানের মূল দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী।
উল্লেখ্য অনুষ্ঠিত হওয়া ফাল্গুনের এ মাহফিলে মুসল্লিদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ লাখ। এদের নিরাপত্তা ও সহযোগিতার জন্য নিয়োজিত ছিল প্রায় সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক, কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবী বিশেষ নিরাপত্তা কর্মী, প্রায় একশ লাইট, মাইক ও টেলিফোন টেকনেশিয়ান, একদল নিবেদিত ডুবুরি, ফায়ারসার্ভিস কর্মী, পুলিশ, RAB ও গোয়েন্দা বাহিনী।
দেশ-বিদেশের মেহমানদের জন্য ছিল প্রায় ৭টি সুবিশাল মেহমানখানা। যেগুলোতে প্রায় কয়েকহাজার খাদেম নিয়োজিত ছিলো।
মাহফিল কর্তৃপক্ষের করা অস্থায়ী মেডিকেলে সেবা নিয়েছে প্রায় কয়েক হাজার রোগী। তবে কতজন লোক মারা গেছে তার তথ্য কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি আওয়ার ইসলামকে জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৭ মার্চ মাহফিলের প্রথমদিন ট্রলার ডুবিতে বেশ কয়েকজন মুসল্লি নিখোঁজ হন, আওয়ার ইসলাম টিমের পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী আজ ১০ মার্চ সকাল পর্যন্ত ডুবুরিরা ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
তিনদিনের এ মাহফিলে টিম আওয়ার ইসলাম সর্বশেষ নিউজ তার পাঠকের কাছে তুলে ধরতে সর্বদায় ময়দানে তৎপর ছিলেন।
আওয়ার ইসলাম টিমকে সঙ্গ, মেধা ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, বাংলাদেশ ও ভারত থেকে একাধিকবার পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট নজরুল গবেষক, ছড়াগুরু মহিউদ্দিন আকবর ও বাংলাদেশ লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, কবি মুনিরুল ইসলাম।
এটি